পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ R? হইল। বাগানটা প্ৰধানত: নূতন ছেলেদের পড়াশুনা করিবার আড়া হইয়া রহিল। বোমার আড্ডায় উল্লাসকর আডডাধারী হইয়া বসিল ; আমি ষষ্ঠী বুড়ী হইয়া বাগানে ছেলেদের আগলাইতে লাগিলাম। বারীন চিরদিনই কৰ্ম্মী পুরুষ ; তাহাকে এক জায়গায় স্থির হইয়া বসিবার হুকুম বিধাতা দেন নেই। সে সমস্ত কৰ্ম্মের কেন্দ্রগুলি তদারক করিয়া ছুটাছুটি করিতে লাগিল । এই সময় একটা দুর্ঘটনায় আমাদের মন বড় খারাপ হইয়া গেল । আমাদের একটী ছেলে অকস্মাৎ মারা পড়ে। যতগুলি আমাদের ছেলে ছিল, তাহদের মধ্যে সেইটাই বোধ হয় সব চেয়ে বুদ্ধিমান। তাহার প্ৰকৃতির মধ্যে এমন একটা কি ছিল যে, যে তাহাকে দেখিয়াছে সেই ভাল না বাসিয়া থাকিতে পারে নাই। তাহার মৃত্যু সংবাদ শুনিয়া মাথার মাঝখান হইতে কোমর পর্যন্ত মেরুদণ্ডের ভিতর দিয়া কি যেন । একটা সাড়াৎ করিয়া নামিয়া গেল। একটা অন্ধ রাগ আর ক্ষোভে মনটা ভরিয়া গেল। মনটা শুধু আৰ্ত্তনাদ করিতে করিতে বলিতে লাগিল—“সব চুলোয় যাক, সব চুলোয় যাকৃ!” । বৈদ্যুনাথে তাহাকে দেখিতে গিয়াছিলাম। সেখানে মন টিকিল না । অন্ধকার পথ যে দিন দিন আরও অন্ধকারময় হইয়া উঠিতেছে তাহা বেশ वृश्लिभ । কিন্তু উপায় নাই—চলিতেই হইবে। অনশন, অৰ্দ্ধাশন, আসন্নবিপদ ও প্রিয়জনের ভীষণ মৃত্যুর মধ্য দিয়া এ দুৰ্গম পথ অতিক্রম কয়িতেই হইবে । এ বিবাহের যে এই মন্ত্র । , বাহিরে কাজকৰ্ম্ম তুমুল বেগে চলিতে লাগিল ; কিন্তু মনের মধ্যে । কেমন যেন একটা শক্তির অভাব অনুভব করিতে লাগিলাম। এই যে অকুল সমুদ্রে পাড়ি দিয়া চলিয়াছি, ইহার শেষ কোথায়? এই যে