পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ IF সাধু বলিলেন—“সকলের জন্য এ সাধনা নয়, শুধু নেতাuদর জন্য। {াহারা দেশের লোককে পথ দেখাইবে, তাহদের নিজেদের পথটা জানা চাই। দেশ স্বাধীন করিতে হইলেই যে খুব খানিকটা রক্তারক্তি দরকার,--- এ কথাটা সত্য নাও হইতে পারে।” বিনা রক্তপাতে যে দেশোদ্ধার হইবে। এ কথাটা আমাদের নিতান্ত আরব্য উপন্যাসের মত মনে হইল! আমরা একটু বিজ্ঞতার হাসি হাসিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম-“তাও কি সম্ভব ?” সাধু বলিলেন—“দেখ, বাবা, যে কথা আমি বলিতেছি, তাহা জানি লিয়াই বলিতেছি। তোমরা যে উদ্দেশ্যে কাজ করিতেছ, তাহ সিদ্ধ হইবে, কিন্তু যে উপায়ে হইবে ভাবিতেছ, সে উপায়ে নয়। আমার বিশ বৎসসের সাধনার ফলে আমি ইহাই জানিয়াছি। চারিদিকের অবস্থা এক সময় এমনি হইয়া দাড়াইবে, ষে সমস্ত রাজ্যভার তোমাদের । যাতে আপনিই আসিয়া পড়িবে। তোমাদের শুধু শাসন-ব্যবস্থা প্ৰণালী । গড়িয়া লইতে হইবে মাত্র । আমার সঙ্গে তোমরা জন কতক এস ; সাধনার প্রত্যক্ষ ফল যদি কিছু না পাও, ফিরিয়া আসিও।” সে দিন সাধু চলিয়া যাইবার পর আমাদের মধ্যে বিষম তর্কাতকি বাধিয়া গেল। বারীন ঘাড় বঁাকাইয়া বলিল—“কিছুতেই নয়। কাজ " আমি ছাড়বে না। বিনা রক্তপাতে ভারত উদ্ধার-এটা ওঁর খেয়াল। সাধুর আর সব কথা মানি, শুধু ঐটে ছাড়া।” আমার মনটা কিন্তু সাধুর কথায় বেশ একটু ভিজিয়াছিল; দেখাই যাক না, রাস্তাটা যদি কোন রকমে একটু পরিষ্কার হয়! নিজের সঙ্গে বেশ একটা বোঝা পড়া না হইলে কোন কাজেই যে মন যায় না! আমি আর দুই একটী ছেলেকে লইয়া সাধুর সঙ্গে যাইব বলিয়া স্থির করিলাম। সাধু আর একদিন বারীনকে বুঝাইতে আঁদিলেন ;