পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ পরিচ্ছেদ ७१ কািরয়া আধ্য আধা স্বয়ে আমাদের জানাইয়া দিলেন যে, আমাদের ধরিয়া তিনি যে কসাইবৃত্তি করিয়াছেন তাহার জন্য তিনি মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে পীড়িত ! বলাবাহুল্য আমাদের নিকট হইতে স্বীকারোক্তি (Confession ) বাহির করাই এ সমস্ত অভিনয়ের উদ্দেশ্য । আইন কানুন সম্বন্ধে আমাদের অভিজ্ঞতা যেরূপ প্ৰচণ্ড তাঁহাতে আমাদিগকে বধ করিতে র্তাহাদের বড় অধিক বেগ পাইতে হইল না। উল্লাস বলিল যে, যে সমস্ত । বাহিরের লোক বিনা কারণে আমাদের সঙ্গে ধরা পড়িয়াছে তাহদের বঁাচাইবার জন্য আমাদের সব সত্য কথা বলা দরকার । উল্লাসের বিশ্বাস আমরা সত্য কথা বলিলেই ধৰ্ম্মাত্মা পুলীস কৰ্ম্মচারীরা তাহা বিশ্বাস করিয়া বেচারাদের ছাড়িয়া দিবে। বারীন্দ্ৰ বলিলেন-“আমাদের দফা তি এই খানেই রফা হইল, এখন আমরা যে কি করিতেছিলাম তাহা দেশের লোককে বলিয়া যাওয়া দরকার।” এই সমস্ত কথা লইয়া বিচার বিতর্ক চলিতেছে এমন সময় রায় বাহাদুর রামসদয় একখণ্ড হাতে লেখা কাগজ লইয়া ঘরে ঢুকিলেন। মহা উৎসাহে বলিলেন—“এই দেখি, বাবা, হেমচন্দ্রের statement ; সে সব কথাই স্বীকার করেছে।” বলা বাহুল্য কথাটা সর্বৈব মিথ্যা। হেমচন্দ্রের বলিয়া যে Statement টা তিনি আমাদের শুনাইলেন তাহা একেবারেই তঁহার মনগড়া। কিন্তু আমাদের বুদ্ধির অবস্থা তখন এমনই শোচনীয় সে সমস্ত ব্যাপারটা যে আমাদের নিকট হইতে স্বীকারোক্তি বাহির করিবার জন্য অভিনয় মাত্র তাহা বুঝিয়া উঠতে পারিলাম না। আমরা দুই একটা ঘটনা সম্বন্ধে আমাদের দায়িত্ব স্বীকার করিয়া সে রাত্রের জন্য নিস্কৃতি পাইলাম। পর দিন দুপুর বেলা যখন আমাদের লালবাজার পুলিস কোর্টে হাজির করা হইল তখন ধর-পাকড়ের উত্তেজনা অনেকটা কমিয়া গিয়াছে; ছেলেদের মধ্যে অনেকেরই মুখ শুকাইয়া গিয়াছে। একটী ছেলে কাছে।