পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ SS

  • ধরা পড়িলাম। এ দুঃখ যে মরিলেও ঘুচিবে না! একজন পুলিস সাজেণ্ট ঠাট্টা করিয়া বলিয়াছিল—“এরা এমনি সুবোধ ছেলে যে বাগানে ঘুমাইবার সময় রাস্তায় একজন পাহারা পৰ্যন্ত রাখে নাই।” কথাটা সারারাত মাথার ভিতর ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিল ; কিন্তু এখন আর হাত কামড়ান ছাড়া উপায় নাই। একবার উল্লাসের উপর রাগ ধরিল। পুলিসের দল যখন প্রথম বাগানে আসিয়া ঢুকে, , তখন সে জাগিয়া উঠিয়াছিল ; ইচ্ছা করিলে সে পলাইতেও পারিত। কিন্তু নিৰ্ব্বিকার সাক্ষীস্বরূপ ব্ৰহ্ম পুরুষের ন্যায় সে ব্যাপারটা চুপ চাপ বসিয়া দেখিয়াছিল মাত্র ; পলাইবার কথা তাহার মনে আসে নাই !

সে রাতটা এই রকম দুশ্চিন্তায়, কাটিয়া গেল। সকালে উঠিয়া কুঠারীর ( cell ) বাহিরে উকি মারিয়া দেখিলাম-নরক একেবারে গুলজার। আমাদের সব আড়াগুলির ছেলেরাই আসিয়া জুটিয়াছে। অধিকন্তু পাঁচ সাতজন অপরিচিত ছে? লাও দেখিলাম । ইহারা আবার কোথাকার আমদানি ? একটাকে জিজ্ঞাসা করিলাম—“বাপু হে, তুমি কে বট ?” । ছেলেট, কঁাদ কঁাদ হইয়া বলিল-“আজেন্তু আমার বাড়ী মানিকতলায়। আপনাদের বাগানের কাছে সকালবেলা একটু মণিং ওয়াক করতে গিছলাম ; তাই শালারা আমায় ধরে এনেছে। মৰ্ণিং ওয়াক । করাটা যে এত বড় মহাপাপ তা”ত জানতুম না।” দেখিলাম নগেন সেনগুপ্ত আর তার ভাই ধরণীকেও পুলিস জেলে পুব্রুিয়াছে। বেচারারা বােমার ‘ব’ পৰ্যন্ত জানে না। পুলিসে বােমার আডিডার সন্ধান পাইয়াছে ভাবিয়া উল্লাসকর বোমাগুলি কোথায় সরাইয়া রাখিবে স্থির করিতে না পারিয়া বাল্যবন্ধু নগেনের বাড়ীতে একটা বােমার প্যাটরা রাখিয়া আসিয়াছিল। প্যাটরার ভিতর যে সাপ আছে কি ব্যাঙ আছে, নগেন বা ধরণী, তাহার বিন্দু-বিসর্গও জানিত