পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ty নির্বাসিতের আত্মকথা খণ্ড দিয়া তাহদের কাণের ছিদ্র বন্ধ করিয়া দিয়াছেন। জেলার বা সুপারিনটেনডেন্ট আসিবার সময় তাহারাই আমাদের সতর্ক করিয়া দিতে । লাগিল। রৌপ্যখণ্ডের যে অনন্ত মহিমা তাহা এত দিন কাণেই শুনিয়াছিলাম, তাহার এইবার প্রত্যক্ষ প্ৰমাণ পাইয়া মানব জন্ম সফল হইল । কিন্তু একটা দুঃখ কতকটা ঘুচিতে না ঘুচিতে আর এক দুঃখ দেখা দিল । আমরা জেলে আসিবার পর হইতেই জেলের মধ্যে সি, আই ডির কৰ্ত্তাদিগের শুভাগমন আরম্ভ হইয়াছিল । তঁহাদের কথাবাৰ্ত্তা শুনিলে মনে হইত যেন আমাদের বীরত্বের গৌরবে তঁহাদের বুক ফুলিয়া দশ হাত হইয়াছে, আমাদের সহিত সহানুভূতিতে প্ৰাণ যেন তঁহাদের ফাট-ফাট । কথাগুলি তঁহাদের এমনি মোলায়েম, হাব ভাব এমনি চিত্তবিমোহন যে দেখিলে শুনিলেই মনে হইত ইহারা আমাদের পূর্ব জন্মের পরমাত্মীয় । তবে ধরা পড়িবার পরদিন তঁহাদের ঘরে একরান্ত্রি বাস করিয়া এসব ছলাকলার পরিচয় অনেক পূর্বেই পাইয়াছিলাম-তাই রক্ষা। ইহারা সপ্তাহ খানেক যাতায়াতের পর নরেন্দ্ৰ গোস্বামী যেন হঠাৎ একটু বেশী অনুসন্ধিৎসু হইয়া দাড়াইল । বাংলা ছাড়া ভারতের অন্য কোথাও বিপ্লবের কেন্দ্ৰ আছে কি না, আর থাকিলে সেখানকার নেতাদের নাম কিইত্যাদি অনেক রকম প্ৰশ্নই সে আমাদের জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল । জেলের কর্তৃপক্ষের এক আধা জনের কথাবাৰ্ত্তায়ও বুঝিলাম-একটা গোলমাল কোথাও লাগিয়াছে । হৃষীকেশ একদিন আসিয়া আমায় বলিল—“গোটা দুই তিন বেয়াড় রকমের মাদ্রাজী বা বগি টাগির নাম বানিয়ে দিতে পারিস ?” “কেন ?” “নরেন বোধ হয় পুলিসকে খবর দিচ্ছে ; গোটা কত উদ্ভট রকমের নাম বানিয়ে দিতে পারলে-স্যাঙ্গাতরা দেশময় অশ্বডিম্ব খুজে খুঁজে