পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tR নির্বাসিতের আত্মকথা জনেই বেশ গাহিতে পারিত ; কিন্তু দেবব্রত গম্ভীর পুরুষ-বড় একটা গাহিত না । অনেক পীড়াপীড়িতে একদিন তাহার স্বরচিত একটা গান আমাদের শুনাইয়াছিল, ভারত-ব্যাপী একটা বিপ্লবকে লক্ষ্য করিয়াই তাহ রচিত। তাহার সুরের এমন একটা মোহিনী শক্তি ছিল যে গান শুনিতে শুনিতে বিপ্লবের রক্তচিত্র আমাদের চোখের সম্মুখে যেন স্পষ্ট হইয়া ফুটিয়া উঠিত। গান বা পদ্য কস্মিনকালেও আমার বড় একটা মনে থাকে না, কিন্তু দেবব্রতের সেই গানটার দুই এক ছত্র আজও মনে গাথিয়া আছে-- “উঠিয়া দাঁড়াল জননী ! কোটী কোটা সুত হুঙ্কারি দাড়াল ! 豪 制 রক্তে আঁধারিল রক্তিম সবিতা রক্তিম চন্দ্ৰমা তারা, রক্তবর্ণ ডালি রক্তিম অঞ্জলি বীর রক্তময়ী ধরা কিবা শোভিল ! গানটা শুনিতে শুনিতে মানস-চক্ষে বেশ স্পষ্টই দেখিতাম যে আসমূদ্র হিমাচলব্যাপী ভাবােন্মত্ত জনসঙ্ঘ বরাভয়করার স্পর্শে সিংহগর্জনে জাগিয়া । উঠিয়াছে; মায়ের রক্ত-চরণ বেড়িয়া বেড়িয়া গগণ-স্পৰ্শী রক্তশীর্ষ উত্তাল তরঙ্গ ছুটয়াছে; দু লোক ভুলোেক সমস্তই উন্মত্ত রণ-বাদ্যে কঁাপিয়া উঠিয়াছে। মনে হইত যেন আমরা সৰ্ব্ববন্ধনমুক্ত-দীনতা, ভয়, মৃত্যু আমাদের কখন স্পর্শ করিতেও পরিবে না। ছেলেরা অনেকেই সেকালের স্বদেশী গান গাহিত। তাহাদের অদম্য, উৎসাহ আর ঋত্তি চাপিয়া রাখাই দায়! শচীন সেন ছিল তাহাদের অগ্রণী। পনের বৎসর যখন তাহার বয়স তখন সে মা বাপের কথা ঠেলিয়া