পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ሓ፩ b” নির্বাসিতের আত্মকথা কানাই হাসপাতালে যাইবার তিন চারি দিন পরেই, একদিন । সকালবেল বিছানা হইতে উঠিয়া আমরা মুখ হাত ধুইতেছি, এমন সময় হাসপাতালের দিক হইতে দুই একটা বন্দুকের মত আওয়াজ শুনিলাম । কিছুক্ষণ পরে দেখিলাম চারিদিক হইতে কয়েদী পাহারাওয়ালারা হাসপাতালের দিকে ছুটিতেছে। ব্যাপার কি ? কেহ বলিল বাহির হইতে হাসপাতালের উপর গোলা পড়িতেছে, কেহ বলিল সিপাহিরা গুলি চালাইতেছে। হাসপাতালের একজন কম্পাউণ্ডার ঘুরপাক খাইতে খাইতে ছুটয়া আসিয়া জেলের অফিসের কাছে শুইয়া পড়িল । ভয়ে তাহার মুখ বিবৰ্ণ হইয়া গিয়াছে। যে সংবাদ দিবার জন্য সে ছুটিয়া আসিয়াছিল, তাহা তাহার পেটের মধ্যেই রহিয়া গেল ! প্ৰায় দশ পানের মিনিট এইরূপ উৎকণ্ঠায় কাটিল, শেষে একটা পুরাণো চোর ছুটিয়া আসিয়া আমাদের সংবাদ দিল :- ‘নরেন গোসাই ঠাণ্ডা হয়ে গেছে!” ‘ঠাণ্ড হয়ে গেছে কি রে?” “আজ্ঞে, হঁ্যা বাবু ; কানাই বাবু তা’কে পিস্তল দিয়ে ঠাণ্ডা করে দিয়েছে। ঐ দেখুন গে না-কারখানার সুমুখে সে একদম লম্বা হয়ে পড়েছে। আর জেলার বাবুরও আপ্ন একটু হলে হয়ে যেত। তিনি কারখানায় ঢুকে পড়ে বেঞ্চির তলায় লুকিয়ে খুব প্ৰাণটা বঁচিয়েছেন।” প্রায় পনের মিনিট পরে জেলের পাগলা ঘণ্টা (alarm bel) বাজিয়া উঠিল। চারিদিক হইতে জেলের প্রহরীরা চুটিয়া আসিয়া হাসপাতালের দিকে চলিল। কিছুক্ষণ পরে দেখিলাম তাহারা কানাই ও সত্যেনীকে । ধরিয়া ৪৪ ডিগ্রীর দিকে লইয়া চলিয়াছে।