পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఛ নির্বাসিতের আত্মকথা পৃথক পৃথক কুঠারীর (cell) মধ্যে বন্ধ করিবার হুকুম দিয়া গেলেন, ডিগ্ৰী খালি করিয়া আমাদিগকে সেখানে লইয়া যাইবার বন্দোবস্ত চলিতে লাগিল । সন্ধ্যার সময় জেলার বাবু আমাদের সহিত দেখা করিতে আসিলেন । ভদ্রলোকের মুখ একেবারে শুকাইয়া গিয়াছে। তিনি বলিলেন-“মশায়, এতই যদি আপনাদের মনে ছিল, ত জেলের বাইরে কাজটা করলেই ত হতো। দেখছি ত আপনারা একেবারে মরিয়া ; তবে ধরা পড়তে গেলেন কেন?” আমরা সমস্বরে প্রতিবাদ করিয়া তাঞ্ছাকে বুঝাইতে চেষ্টা করিলাম নে এ কাৰ্য্যের সহিত আমাদের কিছু মাত্র সম্বন্ধ নাই। তিনি অবিশ্বাসের হাসি হাসিয়া বলিলেন—“আজ্ঞে হা, তা বুঝতেই পারাচি । যাই হোক, আপনাদের যা হবার তা তা হবে; এখন আমার দফা রফি। হয়ে গেল !” এক সপ্তাহের মধ্যেই ৪৪ ডিগ্ৰী হইতে সমস্ত কয়েদী অন্যান্য জেলে চালান করিয়া আমাদের সেখানে স্থানান্তরিত করা হইল। জেল যে কাহাকে বলে এতদিনে তাহা বুঝিলাম। পুরাতন সুরারিনটেনডেন্টের উপর নরেন্দ্রের হত্যাকাণ্ডের অনুসন্ধানের ভার পড়িল ; তাহার জায়গায় নূতন সুপারিনটেনডেন্ট আসিয়া কাজ করিতে লাগিলেন। পুরাতন জেলার ও ডাক্তার বদলি হইয়া গেলেন। আমাদের হাসপাতাল যাওয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হইয়া গেল। অসুখ হইলে কুঠারীর মধ্যেই পড়িয়া থাকিতে হইত। কাহারও সহিত আর কাহারও কথা কহিবার উপায় রহিল না। সমস্ত দিন কুঠরীর মধ্যে খাও, দাও, আর চুপ করিয়া বসিয়া থাক। জেলের অন্যান্য অংশ হইতেও কোন লোক ৪৪ ডিগ্ৰীতে ঢুকিতে পাইত না। ক্ৰমে দেশী প্রহরীর পরিবর্বে ইউরাপীয় প্রহরী আসিল, আর দিনের