পাতা:নিশীথ-চিন্তা - কালীপ্রসন্ন বিদ্যাসাগর.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুঃখে সুখ। । Վ)Գ কথাটা সাহিত্যে অধিকতর পরিস্ফুট । সাহিত্য যখনই রসে গাঢ়, স্বাদে বিশুদ্ধ ও মধুর, এবং উৎকর্ষে অধিকতর উচ্চ, সুতরাং অধিকতর আরাধ্য হয়, তখনই উহার সুখের চিত্র, মেঘাবৃত চন্দ্ৰমার মত, দুঃখেরই আর এক খানি মূৰ্ত্তি বলিয়া প্ৰতীয়মান হইয়া থাকে। সাহিত্যের মূলমন্ত্র সুখ, গ, মনুষ্য কোন পথে চলিয়া কোথায় যাইয়া সুখী হইঠে ਅਰ, छैछिङा তাহাই সাক্ষাৎসম্বন্ধে অথবা প্ৰকারান্তরে প্রদর্শন করে। মনুষ্য কিরূপ সুখকে বিষবৎ, পরিহার করিয়া, কিরূপ সুখের ভজনা করিলে, ক্রমে উন্নত ও জীবনে চরিতার্থ হইবে, সাহিত্য তাহারই আদর্শ চিত্ৰ আঁকিয়া দেখায় । ইতিহাস, উপন্যাস, কাব্য দর্শন, নীতিজ্ঞান ও সমাজ-বিজ্ঞান, সকল শাস্ত্রেরই ঐ এক কথা, সাহিত্যের সকল বিভাগেই ঐ এক আলাপ | সাহিত্য খে সৌন্দৰ্য্যের মূৰ্ত্তি আঁকিতে যত্নবান হয়, ইহার এই অর্থ যে, সুন্দরের উপাসনা করিতে শিখিলেই মানুষ আপনি সুন্দর হইয়া পরিণামে সুখী হইবে । সাহিত্য যে কুৎসিত ও বীভৎসের কদৰ্য্য মূৰ্ত্তি আঁকিয়া মনুষ্যের বিরক্তি জন্মায়, তাহারও এই অর্থ যে, মনুষ্য কুৎসিত ও বীভৎস বস্তুকে হৃদয়ের সহিত ঘৃণা করিতে শিখিলেই পরিশেষে সৌন্দৰ্য্যে অনুরাগী হইয়া সুখের পথ পাইবে । কিন্তু যদি দেখিতে ইচ্ছা হয় চাহিয়া দেখ, সাহিত্যের যে চিত্র মানুষের চক্ষে যত বেশী সুখ-প্ৰদ, সুখ-শীতল, জানি না কি এক ভাবের পরিমিশ্রণে সেই চিত্ৰই তত বেশী দুঃখাবহ ।