নয়নতারা উদাসভাবে জবাব দিলে, দেখতেই ত পাচ্চ।
তা ত পাচ্চি। কোথায় যাওয়া হবে?
নয়নতারা তেমনিভাবে কহিল, যেখানে হোক।
তবু, কোথায় শুনি?
কি করে জানব দিদি, কোথায়? উনি বাসা ঠিক করতে বেরিয়েছেন ফিরে না এলে ত বলতে পারিনে।
তােমার ভাশুর শুনেছেন?
তাঁকে শুনিয়ে কি হবে? যাঁর শােনা দরকার, সেই ছােটগিন্নী শুনেছেন, আড়ালে দাঁড়িয়ে একবার দেখেও গেছেন।
এটা নয়নতারার মিছে কথা। শৈলজার এই সকাল বেলাটায় নিশ্বাস ফেলিবার অবকাশ থাকে না―সে কিছুই জানিত না।
সিদ্ধেশ্বরী ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া বলিলেন, দেখ মেজবৌ, এই ভাশুরের মান-মর্যাদা তােমরা বুঝলে না, কিন্তু বাইরের লােককে জিজ্ঞাসা করলে শুনতে পাবে,অনেক জন্ম জন্মান্তরের তপস্যার ফলেই এমন ভাশুর পাওয়া যায়, নইলে পাওয়া যায় না।
নয়নতারা সহসা উদ্দীপ্ত হইয়া উঠিল; বলিল, আমরা সে কথা কি জানিনে দিদি? দুজনে দিবারাত্রি বলাবলি করি, শুধু ভাশুর নয়, অনেক পুণ্যে এমন বড়জা মেলে। তােমার বাড়িতে আমরা ঘরদোর ঝাঁট দিয়ে চাকরদের মত থাকতে পারি, কিন্তু এখানে আর একদণ্ড বাস করতে পারব না।
আজ নয়নতারার কণ্ঠস্বরে এমন একটু আন্তরিকতার আভাস সিদ্ধেশ্বরীর কানে বাজিল যে,তিনি আর্দ্র হইয়া পড়িলেন। কহিলেন, এ আমার বাড়ি ত নয় মেজবৌ, বাড়ি তােমাদেরই। কোনমতেই তােমাদের আমি আর কোথাও যেতে দিতে পারব না।
নয়নতারা ঘাড় নাড়িয়া করুণ কণ্ঠে কহিল, যদি কখন ভগবান তেমন দিন দেন দিদি, তা হলে তােমার কাছে এসেই আমরা থাকব; কিন্তু, এখানে একটি দিনও আর থাকতে বলাে না দিদি। আমার অতুল