প্রতি চাহিয়া বলিলেন, বড়গিন্নী বলছিলেন, তুই যা মুখে আসে, তাই বলে তাকে গালমন্দ করেছিস। ও কি আমাকে মিথ্যা কথা বললে?
রমেশ অবাক হইয়া সিদ্ধেশ্বরীর মুখের প্রতি চাহিয়া রহিল।
সিদ্ধেশ্বরী গর্জিয়া উঠিলেন, তােমার কি ভীমরতি ধরেচে? কখন তোমাকে বললুম ছােটঠাকুরপাে অতুলকে গালমন্দ করেছে?
হরিশ ভ্রম সংশােধন করিয়া ধীরে ধীরে কহিলেন, না—না, সে ছােটবৌমা।
তখন গিরীশ বলিলেন, ছোটবৌমাই বা কেন গালমন্দ করবেন শুনি?
সিদ্ধেশ্বরী তেমনি সক্রোধে অস্বীকার করিয়া কহিলেন, সেই বা কেন অতুলকে গালমন্দ করবে। সেও করেনি। আর যদি করেই থাকে, তাকে বলব আমি। তুমি ছােটঠাকুরপােকে খোঁচা দিচ্চ কেন?
গিরীশ কহিলেন, অচ্ছি, তাই যেন হ’লো, কিন্তু তুই হতভাগা এমনি অপদার্থ যে, খড়ের দালালি করে আমার চার-চার হাজার টাকা উড়িয়ে দিলি, আর দেখ গে যা বাগবাজারের খাঁ-দের। এই খড়ের দালাতিতে ক্রোড়পতি হয়ে গেল।
হরিশ আশ্চর্য হইয়া কহিলেন, খড়ের দালালি?
রমেশ কহিল, আজ্ঞে না, পাটের।
গিরীশ রাগিয়া বলিলেন, তারা আমার মক্কেল—আমি জানিনে, তুই জানিস! খড়ের দালালি করেই তারা বড়লােক। বিলাতে জাহাজ-জাহাজ খড় পাঠাচ্ছে।
হরিশ এবং রমেশ উভয়েই চুপ করিয়া রহিল।
গিরীশ তাহাদের মুখপানে চাহিয়া বলিলেন, আচ্ছা,না হয় পাটই হলাে। এই পাটের দালালি করে তুই কি দু’শ একশ করে আনতে পারিস নে? তোমাদের আমি ত চিরকালটা বসে বসে খাওয়াতে পারব না! যে মাটিতে পড়ে লােক ওঠে তাই ধরে’। একবার চার হাজার গেছে—গেছেই। কুছ পরোয়া নেই—আর চার হাজার দাও।