পাতা:নিষ্‌কৃতিলাভপ্রয়াস.djvu/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নিষ্কৃতিলাভপ্রয়াস।

অনুভবপথে আসিতে পারে। দুই তিন দিন পরে, আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, তর্কালঙ্কার আপনকার কিরূপ ব্যবস্থা করিয়া গিয়াছেন। তিনি বলিলেন, মদন আমার কোনও ব্যবস্থা করিয়া যান নাই। বধূমাতা, আপন কন্যাগুলি লইয়া, স্বতন্ত্র আছেন। আমার দিনপাতের কোনও উপায় নাই; এজন্যে তোমার নিকটে আসিয়াছি। যদি তুমি দয়া করিয়া অন্ন বস্ত্র দাও, তবেই আমার রক্ষা; নতুবা আমায় অনাহারে প্রাণত্যাগ করিতে হইবেক। এই বলিয়া, তিনি রোদন করিতে লাগিলেন।

 তাঁহার কথা শুনিয়া, আমি বিস্ময়াপন্ন হইলাম। বিশ্বস্ত লোকের মুখে শুনিয়াছিলাম, তর্কালঙ্কার যথেষ্ট টাকা রাখিয়া গিয়াছেন; অথচ তাঁহার বৃদ্ধা জননীকে, অন্ন বস্ত্রের জন্যে, অন্যের নিকটে ভিক্ষা করিতে হইতেছে। যাহা হউক, কিয়ৎ ক্ষণ কথোপকথনের পর, তিনি বলিলেন, মাস মাস দশ টাকা পাইলে, আমার দিনপাত হইতে পারে। এই সময়ে, রোগ, শোক, আহারক্লেশ প্ভৃতি কারণে, তাঁহার শরীর সাতিশয় শীর্ণ হইয়াছিল; অধিকন্তু, চক্ষুর দোষ জন্মিয়া, ভাল দেখিতে পাইতেন না। তিনি বলিলেন, শরীর সুস্থ থাকিলে, ও চক্ষুর দোষ না জন্মিলে, পাঁচ টাকা হইলেই আমার চলিতে পারিত। কিন্তু শরীরের ও চক্ষুর যেরূপ অবস্থা ঘটিয়াছে, তাহাতে একটি পরিচারিকা ব্রাহ্মণকন্যা না রাখিলে, আমার কোনও মতে চলিবেক না। আমার যে অবস্থা ঘটিয়াছে, তাঁহাতে আমি অধিক দিন বাঁচিব না;