বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ময়মনসিং পাবনা নোয়াখালি থেকে পালিয়ে। আমাদের পাশের বাড়ির ফ্লাট্‌গুলো সব বোঝাই। এক-এক গেরস্ত বাড়িতে তিন-চার ঘর লোক আশ্রয় নিচ্চে।

 —কেন নিচ্চে? কোথাও তো কোনো গোলমাল নেই।

 —তা কি জানি বাপু, অত-শত জিগ্যেস্ করেচে কে? বীণাদের বাড়িই ওর পিসতুতো ভাই আর বীণার দাদামশায়ের ছোট ভাই এসেচেন ছেলেমেয়ে নিয়ে।

 কথাটা মন্দ নয়। নাম রেজেষ্ট্রি করিয়াছি, জমি কোথাও যাইবে না। তবে আর এক-আধ কাঠা বেশী জমি রাখিব কি না, ইহাই ধার্য করিবার পূর্বে কলোনিটা একবার চোখে দেখা উচিত নয় কি?

 সন্ধ্যার সময় ঝড়ের বেগে বীণার কাকা আমার ঘরে প্রবেশ করিলেন। বলিলাম—ব্যাপার কি? এত ব্যস্ত কেন?

 —নিয়ে নিন, নিয়ে নিন। জমি কোথাও এতটুকু পাওয়া যাবে না এর পরে। হাজার হাজার লোক আসচে ‘ইষ্টবেঙ্গল’ থেকে। আমার বাড়ি তো ভর্তি হয়ে গেল। জমি এইবেলা যা যেখানে নেবার নিয়ে নিন।

 —বলেন কি?

 —সত্যি বলচি। কলোনির জমিটা চলুন কাল দেখে আসি। দেখে এসে কিছু বেশী করে জমি ওখানেই কিনে রাখুন। কত করে দাম নেবে তা কিন্তু এখনো বলেনি। কাল সেটাও ওদের আপিস থেকে জেনে আসি চলুন—

 —কোথায় যেন ওদের আপিস?

 —রাজীবনগর। কোন্নগরের কাছে।

 পরদিন কিন্তু আমাকে একাই যাইতে হইল।

 বীণার কাকা যাইতে পারিলেন না, তাঁহার বাড়িতে আবার দুটি গৃহস্থ আসিয়া উঠিয়াছেন। তাঁহাদের লইয়া তিনি বিব্রত হইয়া পড়িলেন।

8