বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ডালে পথ ভর্তি, কাঁটা ফুটবার ভয়ে আমরা ডিঙিয়ে ডিঙিয়ে পথ চলছি আধ-অন্ধকারের মধ্যে।

 এমন সময় বাদল কি একটা পায়ে বেধে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। আমায় বললে—দ্যাখ তো রে জিনিসটা কি?

 আমি হাতে তুলে নিলাম, একটা ছোট টিনের বাক্স, চাবি বন্ধ! এ ধরনের টিনের বাক্সকে পাড়াগাঁ অঞ্চলে বলে, ‘ডবল টিনের ক্যাশ বাক্স’। টাকাকড়ি রাখে পাড়াগাঁয়ে। এ আমরা জানি।

 বাদল হঠাৎ বড় উত্তেজিত হয়ে পড়লো। বললে—দেখি জিনিসটা?

 —দ্যাখ তো, চিনিস?

 —চিনি, ‘ডবল টিনের ক্যাশ বাক্স’।

 —টাকাকড়ি থাকে।

 —তাও জানি।

 —এখন কি করবি?

 —সোনার গহনাও থাকতে পারে। ভারী দেখেছিস কেমন?

 —তা তো থাকেই। টাকা গহনা আছেই এতে।

 ‘টিনের ক্যাশ বাক্স’ হাতে আমরা দু’জনে সেই অন্ধকার তেঁতুলতলায় বসে পড়লাম। দু’জনে তখন কি করা যায় তাই ঠিক করতে হবে এখানে বসে। আম যে প্রিয় বস্তু, এত কষ্ট করে জল ঝড় অগ্রাহ্য করে যা কুড়িয়ে এনেছি, তাও একপাশে অনাদৃত অবস্থায় পড়েই রইল থলেতে বা দড়ির বোনা গেঁজেতে।

 বাদল বললে—কেউ জানে না যে আমরা পেয়েছি—

 —তা তো বটেই। কে জানবে আর।

 —এখন কি করা যায় বল।

 —বাক্স তো তালা-বন্ধ—

 —এখুনি ইঁট দিয়ে ভাঙ্গি যদি বলিস তো—ওঃ, না জানি কত কি

৯৮