সুসম্বদ্ধ নয়, দ্বিতীয়তঃ ভয়ে তার বুদ্ধিশুদ্ধি (যার আতিশয্য তার কোনোদিনই নেই) লোপ পেয়েছিল, সুতরাং আত্মপক্ষ সমর্থনে সে পটুত্বের বিশেষ পরিচয় দিল না!
উঃ, সে কি মারটাই মারলেন পীতাম্বর জ্যাঠামশাই ওকে, পা থেকে চটি জুতো খুলে! কত কাল কেটে গিয়েচে, দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ বছর, কিন্তু আজও আমি চোখের সামনে গণেশদাদার যন্ত্রণা ও লজ্জাকাতর মুখ দেখতে পাই। মার বটে একখানা। শুধু শোনা যায় পীতাম্বর রায়ের তর্জন-গর্জন এবং চটাং চটাং চটি জুতার শব্দ গণেশদাদার পিঠে। পিঠ ফেটে রক্ত পড়তে লাগলো, দরদর করে। তখনও পীতাম্বর জ্যাঠার থামবার চেহারা ছিল না, নীলু বাঁড়ুয্যের ছেলে মণিদাদা, জোয়ান ছোকরা, দৌড়ে গিয়ে পীতাম্বর রায়ের হাত ধরে টেনে এনে নিরস্ত করলে।
আহা, গণেশদাদা বসে হাপুস নয়নে কাঁদতে লাগলো। আমি জানতাম গণেশদাদা নির্দোষী। আমার চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগলো গণেশদাদার কান্না দেখে। ইচ্ছে হোল পীতাম্বর জ্যাঠার কান ধরে কেউ এখুনি ঘুরপাক দেয় তো আমার মনের রাগ মেটে।
এ সব বাল্যকালের কথা।
সারা বাল্যকাল ধরে দেখেছি গণেশদাদা লোকের ফাইফরমাশ খাটতে খাটতে দিনান্তে একথালা রাঙা আশচালের ভাত কায়ক্লেশে যোগাড় করচে। তাতেই তার কী খুসি!
—ও গণেশদাদা, আজ কি খেলে?
আমি হয়তো প্রশ্ন করি।
তখন গণেশদাদা আস্তে আস্তে বলবে, যেন কল্পনায় খাদ্যগুলো সে আবার পরম তৃপ্তির সঙ্গে আস্বাদ করছে।
—খ্যালাম? তা খ্যালাম মন্দ নয়। তোমার বড় বউদিদি রেঁধেলো অনেকগুলি। খ্যালাম ধরো (আঙুলের পর্বে হিসেব রেখে) ভাত, শুল্কোর (গ্রামের নাম) নাঙা ডাঁটা দিয়ে, কুমড়ো দিয়ে, পেঁজ
১০৯