বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অতটা সুবিধাসম্পন্ন যে জমিটুকু, তাহার খোদ মালিককে বিরক্ত করিতে সাহস করিলাম না।

 দশ মিনিট কাটিল।

 এবার ডাক্তারবাবুই আমাকে বলিলেন—তা, বসুন।

 বসিবার অনুমতি পাইয়া কৃতার্থ হইলাম। অনেকক্ষণ হইতে খাড়া দাঁড়াইয়া আছি। বসিবার মিনিট দুই পরে আমি বলিলাম—ইয়ে—জমিটার কথা—মানে—

 ডাক্তারবাবু মুখ তুলিয়া বলিলেন—কি বলচেন?

 —জমিটার কথা বলছিলাম। মানে—একবার দেখলে ভালো হয়। এদিকে বেলা হয়ে যাবে—

 জমিটা দেখবেন? ও কার্তিক, কার্তিক! যাও, এই বাবুকে জমিটা দেখিয়ে আনো।

 ভাবিলাম, তাইতো ইহা আবার কি। ডাক্তারখানার পাশের ঘরে বড়-বড় হরফে ইংরাজীতে লেখা আছে বটে, ‘দি নিউ ন্যাশনাল ল্যাণ্ড ট্রাষ্ট’।

 গঙ্গার ধারে বিরাট ভূখণ্ড লইয়া এই উপনিবেশ গড়িয়া উঠিবে—কিন্তু গঙ্গা হইতে রাজীবনগরই তো দেখিতেছি আড়াই মাইল দূরে। তবে ইহাও হইতে পারে, দি নিউ ন্যাশনাল ল্যাণ্ড ট্রাষ্টের আপিস এখানে, জমি গঙ্গার ধারে।

 কার্তিক নামধেয় লোকটি ডাক্তারবাবুর আহ্বানে এইমাত্র আসিয়াছিল। বলিল—কোন্ জমি বাবু?

 —আরে, ওই যে বরোজের পশ্চিম গায়ে—

 —জমি?

 —আ মলো যা। হাঁ করে সঙের মত দাড়িয়ে রইলে কেন? হাঁ, জমি। কোথাকার ভূত?

 বাড়ির চাকরটা বোধ হয় বোকা, প্রভুর এমন মূল্যবান ভালো বহু-বিজ্ঞাপিত ভূমিখণ্ডের সম্বন্ধে কোন খবর রাখে না কেন?