—পিঁপড়ে? ওডা তো শিখোওনি দাদাঠাকুর। ও তুমি শিখোওনি। ঝা শিখিইলে, তা মুই এ্যাকটাও ভুলিনি। তা ওডা মোরে শিখিয়ে দাও, পিঁপড়ের ইন্জিরি কি?
—এ্যাণ্ট।
—এ্যাণ্ট? এ্যাণ্ট-এ্যাণ্ট-এ্যাণ্ট-এ্যাণ্ট—
জিউলি গাছটার তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য গ্রাজুয়েট আমি আমার পক্ককেশ গোচারণরত ছাত্রকে ইংরাজি ভাষার পাঠ দিতে দিতে বড্ড দেরি করে ফেলি, বেলা যায় দেখে গণেশই বললে—তুমি এস দাদাঠাকুর। মুই গরু কডারে জল দেখিয়ে আনি পোড়ার খালে—আজ অনেক কথা শেখলনি—এ সব দেশ মুরুক্ষুর দেশ, ল্যাখাপড়ার কথা কেউ বলে না—মোর মত ইন্জিরি ক’জনে জানে, এই তো সব রাখাল ছোঁড়ারা গরু চরাচ্চে, কই ডেকে শুধোও না জলের ইন্জিরি, ধানের ইন্জিরি—সব মুরুক্ষু দাদাঠাকুর—সব মুরুক্ষু—
—পোড়ার খালে মাছ পড়চে আজকাল গণেশদাদা?
—ওই হচ্চে দুচারটো বান, ফলুই, তেচোকো—চলো না একদিন ধত্তি যাই—
—যাবো। দু-একদিন পরে।
—ঝে ক’ডা দিন গাঁয়ে থাকবা, মোরে শেখাবা কিন্তু—
—নিশ্চয়ই। এবার তোমাকে চার ডজন ইংরিজি কথা না শিখিয়ে আর—
—তোমাদের বাপ মায়ের আশিব্বাদে ঝা মুই শিখিচি, তাতেই মোর সামনে কেউ দাঁড়াতি পারে? ওই তো হিবু ঘরামির ছেলে ওস্মান গরু চরাচ্চে—ডেকে শুধোও না—
গণেশদাদা দূরে গোচারণরত একটি তেরো-চোদ্দ বছরের বালকের দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলে।
গ্রামে এসে গণেশদাদার কথা লোককে জিজ্ঞেস করলাম।
১১৪