বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 সে কথা বলিয়া লাভ নাই।

 ডাক্তারবাবু গর্বের সহিত বলিলেন—সাড়ে ছ’শো করে কাঠা, তাই পড়তে পারচে না। সব প্লটের নাম রেজেষ্ট্রি হয়ে গিয়েচে মশাই।

 কিন্তু ‘প্লট’ বলিতে জমির টুকরা বোঝায়, এখানে জমি যে নাই, এ তো সবই জলাভূমি। পুণ্যতোয়া স্বচ্ছসলিলা জাহ্নবী ইহার ত্রিসীমানায় আছেন বলিয়া মনে হইল না।

 বলিলাম—গঙ্গা এখান থেকে কতদূর?

 —বেশী নয়। মাইলখানেক হবে কিংবা কিছু বেশী হবে—

 তাই-বা কি করিয়া হয়? গঙ্গা এখান হইতে চারি মাইলের কম কি করিয়া হয়, বুঝিলাম না।

 সে যাহা হউক, তর্ক করিলাম না। ফিরিয়া আসিলাম। ওই জলাভূমি আর কচুবনই হয় তো ইহার পর পাইব কিনা কে জানে। মন ভীষণ খারাপ হইয়া গেল।

 বাড়ি আসিতেই স্ত্রী ব্যস্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন—হ্যাঁ গা, কি রকম দেখলে? ভালো?

 বলিলাম—চমৎকার!

 —বলো না, কি রকম জায়গা? গঙ্গার ওপর?

 —সংলগ্ন বলা যেতে পারে।

 —বেশ বড় রাস্তা করেচে?

 —মন্দ নয়। বড়ই।

 বীণার কাকাকে সেদিন কিছু বলিলাম না। পঞ্চাশ টাকা জলে ফেলিলাম বটে, কিন্তু হাঁপ ছাড়িয়া বাঁচিলাম। পূর্ববঙ্গই ভালো। আর জমি খুঁজিব না ঠিক করিয়া ফেলিলাম।

 পরদিন র‍্যাডক্লিফের রায় বাহির হইল।

 আমাদের দেশ পশ্চিমবঙ্গে পড়িয়াছে।

১০