বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সাহেবের আদেশ অমান্য করিবার ক্ষমতা কাহারও নাই এ অঞ্চলে, সুতরাং গোপেশ্বরকে আর একখানা গান গাহিতেই হইল।

ভয়ে আকুল বসুদেব
দেখে অকূল যমুনা।
কূলে বসে দুনয়নে বারি ঝরে
কোলে অকূলের কাণ্ডারী তাও জানে না।
একবার ভাব যদি বর্তমান কংসের পদে
দৈবে দয়া যদি হোত পাষাণ হৃদে—
তা হয় না আর
গেল একূল ওকূল দুকূল
অকূল পারে গোকুল
কুলের তিলক রাখতে কুল পেলেম না।
ভয়ে আকুল বসুদেব
দেখে অকূল যমুনা—

 ফালমন্ সাহেব চক্ষু মুদিয়া পাইপ টানিতে টানিতে গান শুনিতেছিলেন। আবার গোপেশ্বরের পিঠ চাপড়াইয়া বলিলেন—বাঃ বাঃ—দাশুরায়ের গানের কাছে আর-সব কিছু লাগে না। কি রগম—কি ওরে বলে গোপেশ্বর?

 —অনুপ্রাস?

 —ওই যা বল্লে। ভারি চমৎকার, লাগতিই হবে যে। দাশুরায় হুঁঃ—

 —আজ উঠি সাহেব।

 —আচ্ছা এসো—

 ফালমন্ সাহেবের কাছারি ঘরে—রাম শ্যামকে মারিয়াছে, শ্যামের গরু যদুর পটলের ক্ষেত নষ্ট করিয়াছে—এই সব গ্রাম্য মামলার বিচার হতো। বিচার সাধারণতঃ করিত নায়েব ষড়ানন বক্‌সি, গুরুতর মোকর্দমায় ফালমন্ সাহেব নিজে বিচারাসনে বসিতেন।

১৫