পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘরের মেঝেতে লুটাইতেছে এবং ঘরের কোণে সেই নীচ জাতীয়া দাসীটা দাড়াইয়া থর থর করিয়া কঁাপিতেছে। পুলিশ তদন্ত হইল। মিঃ ফালমনের কিছু হয় নাই, ব্যাপার নীলকুঠার শক্ত কম্পাউণ্ডের বাহিরে এক পাও গড়ায় নাই। এই ঘটনার পরেও ফালমান সাহেব অনেকদিন বাচিয়া ছিলেন। একাই থাকিতেন। পুত্ৰ কন্যা কখনো আসিতও না। সাহেবের এক ভাই শোনা যায় ইংলণ্ড হইতে কতবার তাহাকে সেখানে যাইতে লিখিয়াছিল, ফালমান সাহেব বলিতেন-এদেশেই জন্ম, এদেশ ভালবাসি। যাবো কোথায় ? যখন মরে যাবে ওই নিমতলাডায় কবর দিও, বাবা আর মায়ের পাশে । এদেশেই জন্ম, এদেশেই মাটি মুড়ি দেবো । ফালমান সাহেব এদেশেই মাটি মুড়ি দিয়াছিলেন। তঁহার মৃত্যু হইয়াছিল। আজ হইতে পাঁচিশ বৎসর পূর্বে। নীলগঞ্জের কুঠা ভাঙ্গিয়া চুরিয়া জঙ্গল হইয়া গিয়াছে। এখন সেখানে দিনমানেও বাঘ বুনো শূয়োরের ভয়ে কেউ যায় না। কুষ্ঠীর নিমতলায় ঘন বুচকঁাটায় দুৰ্ভেদ্য ঝোপের ছায়ায় খুজিলে ফালমান সাহেবের কবরের ভগ্নাবশেষ এখনো কৌতুহলী রাখাল বালকদের চোখে পড়ে। আলমপুর পরগণার বড় তরফের দে চৌধুরী জমিদার বাবুৱা নীলগঞ্জের জমিদারি গবর্ণমেন্টের নীলামে ক্রয় করিয়াছিলেন। პvტ