বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বরো বাগদিনী

 ওর নাম ‘বরো’, এর মানে বলতে পারব না। সবাই ডাকে বরো বাগদিনী ব’লে। একটু মোটাসোটা, কুচকুচে কালো, আঁট খাঁট গড়নের, বয়েস চল্লিশ থেকে পঞ্চাশের মধ্যে।

 এই পাড়াতেই বামুনবাড়ি বরো কাজ করতো, বাইরের কাজ, কারণ বাগদিনীর হাতের জলে কোন কাজ হবে না। গোয়াল গোবর করা অর্থাৎ গোয়াল পরিষ্কার করাই ছিল তার প্রধান কাজ। বিচুলি কেটে গরুকে জাবও দিত। উঠোন ঝাঁটও দিত।

 একদিন শুনলাম, বরো মুখুয্যেবাড়ির কাজ ছেড়ে দিয়েছে। মুখুয্যে মশায় নিজেই এসে আমার কাছে নালিশ করলেন। বললেন তুমি তো পল্লীমঙ্গলের সেক্রেটারী, এর একটা বিহিত করো—

 —কি ব্যাপার হয়েচে কাকা?

 —সেই বরো বিটি আজ কোথাও কিছু না, কাজে এল না আমার বাড়িতে। এক হাঁটু হ’য়ে রয়েছে গোয়াল, থৈ থৈ করছে উঠোন আর বিটি কিনা স্বচ্ছন্দে বললে আমি কাজ করবো না। ছোটলোকের এত বড় আস্পদ্দা আর সহ্যি হয় না। বলি যাই দিকি বিভূতির কাছে, একটা বিহিত এর করো দিকি বাবা।

 —কাজ ছাড়লো কেন হঠাৎ, তা কিছু জানেন!

 —কি করে জানবো বাবা, কাল বললে আমার তামাক পোড়া খাওয়ার পয়সা আলাদা দিতে হবে। তাই বললাম, তিন টাকা করে মাইনে আবার তার ওপর তামাক পোড়া খাওয়ার পয়সা! পারবো না। তাই বাবা—

 —এর কি করা যাবে পল্লীমঙ্গল থেকে বলুন? আপনার পয়সা-

২৪