বেড়া কিন্তু সামনের দিকে একদম ফাঁকা। এই ভীষণ শীতে এই খোলা দাওয়ায় বরো কি একখানা গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে। ঘরের মধ্যেও যেন কে শুয়ে আছে মেঝেতে। বললাম—ঘরে ও কে?
—ও মোর ছেলে ট্যানো। ওরে চেনেন না?
—না, তোমার ছেলে আছে তাই জানিনে। কত বড়?
—তা বাবু শত্তুরের মুখে ছাই দিয়ে বড় সড় হয়েছে। কত তা কি মোরা জানি? এই পাড়ার রাখাল। সবারই গরু চরায়।
—বেশ।
এইবার আমার নজর পড়লো বরো যেখানা গায়ে দিয়েছিল সেই কাপড়খানার দিকে। থলের চট বলেই মনে হওয়াতে জিগ্যেস করলাম—গায়ে দিয়েছ কি ওটা?
এখানা বাবু কম্বল।
—কি রকম কম্বল?
—আর বছর বনগাঁ থেকে এনে ডাক্তার বাবু বিলি করেলেন। এর মধ্যে তুলো পোরা। পাঁচখানা মোদের গাঁয়ে বিলি হয়েল, গোরমেণ্ট থেকে নাকি বিলি হয়েল। কি জানি বাবু, আপনারাই জানেন—মোরা কি খবর রাখি বলুন। দিলে একখানা, নেলাম। তা বাবু কাপড় একখানা পাবো না? মুছলবে বেরোবার উপায় নেই—
গ্রামের লোকে কি করে জীবন কাটায়, ভাল করে দেখিনি কোনোদিন, আজ একে দেখে তা বুঝলাম। এই শীতে একখানা থলের চট গায়ে দিয়ে বাইরে শুয়ে যে আছে, তার কালই নিমোনিয়া যদি হয় এবছরের এই ভীষণ শীতে, তবে কোন্ ডাক্তারখানা থেকে এদের ওষুধ আসবে?
দিনকতক পরে গ্রামে বাঘের উপদ্রব হোল। প্রতি বৎসরই শীতকালে বাঘের উপদ্রব হয় এ অঞ্চলে। লোকের গোয়াল থেকে গরু বাছুর নেয়, রাত্রিচরা গরু তার পরের দিনের আলো হয়তো আর
২৭