বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছেলেটাকে বাঘে ধরেচে—তখুনি কাস্তে বঁটি কোণ থেকে তুলে নিয়ে ছুটে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়িছি—মোর তখন জ্ঞানগম্যি নাই—ছেলেকে বাঘে খাবে আর মুই বসে দ্যাখবো? মোর পেরাণ যায় আর থাকে—বাঘ আসলে মোর ঐ ধাড়ি ছাগলডা ধরেছে তখন—মুই কি অন্ধকারে চকি দেখতি পাচ্ছি কিছু? মুই ভাবলাম মোর খোকারে ধরেছে—

 ক্রমে ভিড় আরও বাড়তে লাগলো দেখে আসবার উপক্রম করচি এমন সময় বোরো বললে—বাবু, একটা কথা। মোর কাপড় একেবারে ফালা ফালা হয়ে গিয়েছে বাঘের সঙ্গে হুড়যুদ্ধ করতি। এ পরে আছি কলু বাড়ির মনো দিদির থানখানা। সকালে এট্টু চেয়ে এনেচে মোর ছেলে গিয়ে। মোর সে কাপড় তো নক্ত-মাখা নোনাতলায় পড়ে রয়েচে ওই দেখুন—ও আর পরা যাবে না। তা বাবু, রেশম কাট খানা মোরে দিয়ে একখানা কাপড়ের ব্যবস্থা করে দ্যান আপনি—এ পরের কাপড়, ওরা আজই চেয়ে নিয়ে যাবে এখন— মুছলবে বেরুতি পারবো না বস্তর বিনে—

 মুখুয্যে কাকাও আমার দিকে চেয়ে অনুনয়ের সুরে বললেন—দাও বাবাজি, ওর রেশন কার্ডখানা দেওয়ার ব্যবস্থা করো, আর যাতে একখানা কাপড় ওকে আজই দিতে পারো—ওর মোটেই কাপড় নেই—যাতে হয় বাবাজি—তুমি মনে করলেই হবে—

 মুখুয্যে কাকা আমার হাতদুটো ধরেন আর কি!

৩০