প্রভাতী
সেদিন কি এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হোল নদীর তীরের কাননভূমিতে।
জানি, এসব কথা লেখা এত কঠিন! একটা ছত্র যদি লিখতে ভুল হয়, মনের ক্রমের সঙ্গে না মেলে, তবে সবটাই ভুল হয়ে যাবে, অস্পষ্ট হবে, অবাস্তব ঠেকবে।
তবু আমায় চেষ্টা করতে হবে। সে অভিজ্ঞতার আনন্দ পরকে দিতে হবে। নিজে ভোগ করে চুপ করে বসে থাকা আমার ভালো লাগে না।
বর্ষার দিনের মেঘমেদুর আকাশ। ঠাণ্ডা দুপুরটি, অথচ বৃষ্টি হয়নি আজ তিন চারদিন। রাস্তা ঘাট শুক্নো খট্ খট্ করচে। ঘন মেঘ জমে রয়েচে আকাশে, কালো মেঘে অন্ধকার জল-স্থল, বৃষ্টি এল এল, অথচ বৃষ্টি আসচে না। স্নান করতে গেলাম নদীতে, ঘরের বাইরে পা দিয়েই কি যে আনন্দ হোল মনে!
সবুজ তাজা প্রাণের প্রাচুর্যে ধরিত্রীর অঙ্ক ভরপুর। শ্যামল আভা, সবুজ মটরলতা, মটরলতায় মটরফল, মাকাল-লতার অগ্রভাগে মাকাল ফল, বুনো যজ্ঞিডুমুর গাছের আর্দ্র গুঁড়িতে থোলো থোলো কচি ডুমুর, ঝোপে ঝোপে নাকজোয়ালের সুদৃশ্য তিন রঙা ফুল (gladiosa superba) দুলচে সজল বাতাসে। সঙ্গে সঙ্গে দুলচে বাঁশের কোঁড়, নদীর গৈরিক জল, ওপারের কাল নলখাগড়ার গুচ্ছ। আমি নদীজলে অবগাহন করলাম বাঁশতলার ঘাটে। স্নান করে উঠলাম সিক্ত বস্ত্রে। উঁচু পাড়, চখা বালির ঘাট, পায়ে এতটুকু কাদা লাগে না কোথাও, আবক্ষ অবগাহন করো, যতদূর যাও ততদূর চখা বালি। নম্র, নতশীর্ষ বেণুবন ঘাটের জলে ছায়া করে থাকে খর রোদের
৩১