সাহায্য
গরীবপুরের হাট হপ্তায় দুদিন। দুদিনই আসি।
গোপালনগরের বাজারে পানবিড়ি বিস্কুটের দোকান। রোজ দোকানে যা বিক্রি, হাটে এলে অনেক বেশি বিক্রি হয় তার চেয়ে; আশে পাশের ক’খানা গ্রামের হাটই করতে হয় এজন্যে।
সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমাদের গাঁয়ের গোপীনাথ বৈরাগী আছে আর গোপালনগরের আলি নিকিরি, মধু জেলে। কিন্তু ওরা গোপালনগর ইষ্টিশান পর্যন্ত আমার সঙ্গে যাবে, বাকিটা যেতে হবে আমাকে একলা। নিতান্ত ভীতু নই, তাই ওই বন-বাদাড়ের মধ্যে দিয়ে একলা যেতে পারবো। আমি পানবিড়ি বিস্কুট বড় থলের মধ্যে পুরে বললাম—চলো। সন্দে হয়ে গেল যে—শীতও পড়েচে আজ বড্ড—
আলি নিকিরি বললে—রও গো রও। তবিল বেঁধে নিই—শীত পড়েচে বটে—
তারপর আমরা তিনজনে রেল রাস্তায় উঠলাম। রেল লাইনের পাশে সরু পায়ে চলার পথ। কিন্তু আমরা সবাই যাচ্ছি একখানা শ্লিপার থেকে আর একখানা শ্লিপারে পা দিয়ে ডিঙ্গিয়ে ডিঙ্গিয়ে। গরীবপুর ইষ্টিশান ছাড়িয়ে লাইনের দুধারে মাঠ আর বন। নির্জন জায়গা, লোকজনের বসতি নেই। ছ’মাইল দূরে গোপালনগর ইষ্টিশান। এ ছ’ মাইলের মধ্যে লাইনের বাঁ পাশে কেবল একখানা চাষাগাঁ আছে মেহেরপুর, তার আধ মাইল পরেই গোপালনগর ইষ্টিশান।
সুতরাং অনেকখানি রাস্তা যেতে হবে হেঁটে এই অন্ধকারে। বেশ মজা লাগে তিনজনে গল্প করতে করতে যাচ্চি বলে।
৩৫