গিরিবালা
দেশের বাড়িতে অনেক দিন ছিলাম না। গ্রামের অন্য সব পাড়ার লোকদের ভালো ভাবে চিনিনে বা জানিনে।
সেবার মাঘমাসের দিন, বাজার থেকে ফিরচি এমন সময় একটি সাদা থান-পরা বিধবা স্ত্রীলোক বিনীত সুরে বললে—একটু দাঁড়ান বাবা—
পরে সে সাষ্টাঙ্গে আমাকে প্রণাম করলে।
এরকম ভাবে প্রণাম পেতে আমি অভ্যস্ত নই। সঙ্কুচিত ভাবে বললাম—এসো মা এসো। কল্যাণ হোক।
—ও বেলা কি বাড়ি থাকবেন?
—হ্যাঁ, কেন বল তো?
—আমি একবার যাবো এখন আপনার কাছে।
—বেশ।
মনে ভাবতে ভাবতে এলাম, মেয়েটিকে আমি অনেকদিন আগে যেন কোথায় দেখেছি। তখন ওর এরকম বিধবার বেশ ছিল না। তা ছাড়া এখন ওর বয়েসও হয়েছে।
বিকেলবেলা যখন মেয়েটি আমার বাড়ি এল, তখন ওকে ভালো করে চিনলাম। এ দেখচি সেই গিরিবালা। এর যৌবনবয়সে আমি একে অনেকবার দেখেছি, তখন এর বেশভূষা ছিল অন্যরকম। বাজারে যাবার আসবার পথে একে রূপের ঝলক ছুটিয়ে হেলেদুলে চলতে দেখেছি। তখন এর পরনে ছিল লালপেড়ে শাড়ী, বাহুতে অনন্ত, হাতে বালা, কানে মাকড়ি, গলায় হার, কোমরে রুপোর গোট্। অনেকদিনের কথা, তখন ম্যাট্রিক পাশ করে সবে কলেজে ভর্তি হয়েছি। কার কাছে যেন শুনেছিলাম ওর নাম গিরিবালা, চরিত্রের
৪২