পবিত্রতার জন্যে বিখ্যাত নয়। সেই থেকে ওকে দেখলে পাশ কাটিয়ে বরাবর চলে গিয়েছি।
গিরিবালার দিকে ভালো করে চেয়ে দেখলাম।
এখন ওর বয়েস হয়েছে, যৌবনে কি রকম ছিল আমার মনে হয় না, তবে এখন ওকে দেখে মনে হয় না কোনোদিন ওর যৌবন ছিল। তবে রংটা এখনো বেশ ফর্সা আছে, চোখদুটি এখনো সুন্দর।
মনে ভাবছিলাম গিরিবালার কি দরকার আমার কাছে। আমি তো কোনোদিন ওর সঙ্গে একটা কথাও বলিনি। আমাকে কি করেই বা ও চিনলে। আমাকে এ গ্রামে অনেকেই চেনে না, কারণ বহুদিন অনুপস্থিতির পরে আবার দেশে ফিরেচি। ছেলেবেলায় যারা আমায় চিনতো, তাদের মধ্যে অনেকেই এখন বেঁচে নেই। গিরিবালা যদিও সেই সময়ের মানুষ, কিন্তু ও আমাকে জানতো না বা চিনতো না সে সময়।
ওর বসবার জন্যে পিঁড়ি পেতে দিয়ে আমার স্ত্রী চলে গেলেন।
আমি বললাম—তোমার নাম গিরিবালা না?
—হ্যাঁ বাবা।
—তুমি আমাকে চেন?
—আপনাকে এ দেশে কে বা না চেনে?
—সেকথা বলচিনে, তুমি আগে আমাকে দেখেছিলে?
—দেখেছিলাম বাবা। তখন তোমার বাবা-মা আছেন। তুমি ইস্কুলে পড়তে যেতে।
—বেশ। বোসো।
কিছুক্ষণ গিরিবালা বসেই রইল চুপ করে। আমি ভাবচি, কেন গিরিবালা এখানে এসেচে। ভেবে কিছুই পাইনি। একটু অস্বস্তিবোধ করতে লাগলাম।
গিরিবালা বেশিক্ষণ কিন্তু আমায় অস্বস্তি ভোগ করতে দিলে না। হঠাৎ সে বেশ গম্ভীরভাবে জিজ্ঞেস করলে—বাবা, ব্রহ্ম কি?
৪৩