—এসো বাবা, বসো। কোন্ গিরিবালা? ও নামের অনেক লোক ছিল। কার কথা বলচো?
—এই যে গিরিবালা আশ্রম করেচে গোয়ালপাড়ায়, পথে ঘাটে বেড়াতে দেখি।
—ওঃ, বুঝলাম। ওকে আর জানিনে?
—ওকে জানতে?
জানতে মানে? জানতে মানে? হুঃ, জানতে। বলে—
—যাক, যাক, সে সব কথা যাক গে। বলি ও কি রকম লোক ছিল?
—তা ভালো লোক ছিল। অনেক স্ফুর্তি করিচি ওর সঙ্গে। ওর চেহারা ভারি সুন্দর ছিল। যেমন নাচতে পারতো তেমনি গাইতে পারতো। একবার নন্দ পাল, যতীন দত্ত আর শশী আচার্যি—তিন জনে দোলের দিন ওর ঘরে সে ফুর্তি কি! ওর মদ খেয়ে সে ঘুরে ঘুরে নাচ কি! কালাপেড়ে সাড়ী পরে ঘুঙুর পায়ে—তারপরে ইদিকে—
—গিরিবালা মদ খেতো?
ফটিক চক্কত্তি হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেওয়ার ভঙ্গি করে বললে—নাঃ, তোমায় দিয়ে বাবাজি কাজ চললো না। গিরিবালা মদ খেতো মানে? গিরিবালা মদ খেতো মানে কি? গিরিবালা মদের পিপের জন্মো দিয়েচে বলো। তুমি বাবাজি এ সবের কি বোঝো। কেন গিরিবালার খবর নিচ্চ, কেন বলো তো? ব্যাপার কি?
—এই জন্যে নিচ্চি যে সে কাল আমার কাছে এসেছিল—
—তোমার কাছে এসেছিল? কেন তোমার কাছে—তার এখন আর—তোমার কাছে বাবাজি, এখন তার বয়েস কত?
—না কাকা, আপনাকে নিয়ে আর পারা গেল না। সে এখন আর সে গিরিবালা নেই, সে এসেছিল আমার কাছে ব্রহ্মের কথা জানতে।
৪৭