গিরিবালা সলজ্জ মুখে বলে—বাবার যেমন কথা! আমিই বা কি কথা বলি? আমি বলি, তাঁর ওপর ভক্তি রাখো, সব হবে। লোকে এসে বিরক্ত করে, আমার গরুর বাছুর হচ্চে না, আমার স্ত্রীর সন্তান হচ্চে না, বেগুনের ক্ষেত থেকে বেগুন চুরি যাচ্চে, গাঁয়ে গরুর ধ্বসা-পশ্চিমের মড়ক লেগেচে, অমুকের বৌয়ের সন্তান হয়ে হয়ে বাঁচে না—এসব আমার কাছে নালিশ। বিহিত করে দ্যাও মা।
—তবে তো খুব দায়িত্ব তোমার—
—বাবা, ওরা কোথায় যাবে বলুন? সংসারে ধরে কাকে? কার ওপর নির্ভর করে? একটা কিছু চাই তো। আমাকেই এসে মা বলে ধরে। আমাকেই সব ধকল সইতে হয়। আমার কি খ্যামতা বল, গোপাল ভালো করবেন। গোপালের প্রসাদী ফুল নিয়ে যাও—যা হয় গোপাল করবেন, তাঁর দয়া। বুজলে না বাবা?
—কাজ হয়?
—হয় বৈ কি বাবা। লাগে তুক্, না লাগে তাক্। ঝাড়ে ঢিল মারলে কোনো বাঁশে লাগবেই। ওরা সংসারী মানুষ, ওদের বুঝ্তে হবে সংসারের ভেতর দিয়েই।—আপনাকে আলো ধরে পৌঁছে দিয়ে আসুক বাবা—
—না, না, আমি বেশ যাবো এখন, সবে তো সন্দে—
—না বাবা, সন্দের সময় এখানে বাঘ বেরোয়। আপনি যান। সঙ্গে লোক দিচ্ছি বড় রাস্তায় তুলে দিয়ে আসুক গিয়ে—
বড় রাস্তায় যে লোকটা আমায় আলো ধরে এগিয়ে দিতে এল, ওর দেখি বড় ভক্তি। আমায় বললে—মা একেবারে সাক্ষাৎ—হেঁ হেঁ—উনিই—সব উনিই—
ভক্তিভরে হাত কপালে ঠেকিয়ে উদ্দেশে প্রণাম করলে।
বললাম—খুব ক্ষমতা নাকি?
—উনিই সাক্ষাৎ—উনিই সব। যা বলবেন, তাই হবে। ছেলে হবে বল্লি ছেলেই হবে, মেয়ে হবে বল্লি মেয়েই হবে। বিষ্টি হচ্চে
৫৫