না, কলাই মুগ বুনতে পারচিনে, জমি ভাঙতে পারচিনে—মাকে গিয়ে ধরলেই হোল—
—বলো কি? বাক্সিদ্ধ নাকি?
—কি বললেন বাবু বুঝতি পারলাম না—
—না ঠিক আছে। তারপর?
—তারপর মোদের বিপদে আপদে সব উনি। ওনারে ছাড়া মোরা জানিনে। ছুটে ছুটে আসচি ওঁর কাছে। মা যা করেন।
লোকটি আমাকে রাস্তায় তুলে দিয়ে চলে গেল। যাবার সময় আমার পায়ের ধুলো নিয়ে প্রণাম করে বললে—দেন একটু চরণের ধুলো ঠাকুর মশাই। আমরা মুরুক্ষু সুরুক্ষু গরীব মানুষ, কি বুঝি বলুন। অনেক কিছু বলে ফেললাম অপরাধ নেবেন না। যাই, মা এসময় দু’একটা ভালো কথা আমাদের শোনান—
—কি কথা?
—ভালো কথা! তেনার—ভগমানের কথা। আমাদের ওসব কথা কে বলচে বলুন। চাষা লোক সারাদিন ভুঁই চাষ ক্ষেত-খামার নিয়েই থাকি। মায়ের ছিরিমুখ থেকে ছাড়া আর পাচ্ছি কোথায় বলুন—কে মোদের শোনাচ্চে!
ও চলে গেল।
এতক্ষণে বেশ চাঁদ দেখা যাচ্ছে ফাঁকে। খামারকালনায় বড্ড জঙ্গল। ঝিঁ ঝিঁ পোকা আর মুগ্রো পোকা ডাকচে বনে ঝোপে।
গিরিবালাকে অন্য চোখে দেখলাম এতক্ষণ পরে। ওর ঠিক স্থানটি কোথায় বুঝতে পেরেচি। ওর সম্বন্ধে আমার যে বিদ্রূপভরা মনোভাব ছিল তা এখন নেই।
গঙ্গা নদী সব জায়গায় নেই, কিন্তু তা থেকে বেরিয়ে শাখা নদী, খাল, সোঁতা সমস্ত দেশের সব লোকের কাছে পৌঁছে দেয় জীবনদায়িনী বারিধারা। গিরিবালা বড় নদীর একটি ক্ষুদ্র সোঁতা, ছোট্ট অজ চাষীদের গ্রামে জল বিতরণ করে বেড়াচ্চে, তা যতই ঘোলা হোক,
৫৬