বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চিঠি

 আজই সকালে যে এমন আশ্চর্য ঘটনা ঘটবে, এমন দিনটি যে নির্দিষ্ট ছিল এমন এক আশ্চর্য কাজের জন্য তা যখন ঘুম ভেঙ্গে উঠেছি তখনও জানি কি?

 আজই বিশেষ করে বলচি এজন্যে যে, আজ আমাদের দিল্লী যাওয়ার দিনটি নির্দিষ্ট ছিল। দিল্লীতে জহরলালজী পৌরোহিত্য করবেন আমাদের এক সভায়।

 সমস্ত জাতের বিভিন্ন প্রদেশের সাহিত্যিক নিমন্ত্রিত হয়েছেন দিল্লীর মহাসম্মেলনে, আমিও সেখানে যাবো, বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করেছি সবাই মিলে মিশে একত্র যাবো। মনে খুব উৎসাহ এবং দীপ্ত আনন্দ।

 এক বন্ধুর চিঠি কাল পেয়েছি, তিনি আমার সঙ্গে যাবেন সস্ত্রীক; আমি যেন কলকাতায় গিয়ে তাঁর ওখানে গিয়ে তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাই।

 গ্রামেই থাকি। সাহিত্য সৃষ্টির জন্যে আমার প্রয়োজন হয় পল্লীপ্রকৃতির শান্ত পরিবেশ, ছায়াভরা লতাবিতান। সেখান থেকে ভারতবর্ষের মর্মকেন্দ্র দিল্লীতে যাবো। পথে পড়বে কাশী এলাহাবাদ কানপুর—ভারতবর্ষের ইতিহাসের কত সুপ্রসিদ্ধ কর্মভূমি। ঐতিহাসিক দিগন্তের কত বিচিত্র বিকাশ ঘটেছিল এদের পুণ্যভূমিতে।

 ভাদ্রের মাঝামাঝি। বনে বনে নাটা কাঁটার ফুলের শিস্ উঁচু হয়ে আছে, ভুর ভুর করছে সুবাস শরতের বাতাসে। এবার বর্ষা বেশি। রোজ লেগেই আছে বৃষ্টি। রাস্তা ঘাটের কাদা শুকুতে চায় না।

 ভাবছি এখানে প্রত্যাসন্ন শরতের অপূর্ব শ্যাম শোভা ছেড়ে দিল্লীর

৫৮