চিঠিখানা এই:—
শ্রীচরণের দাসিকে কি একেবারে ভুলিয়া গিয়াছেন? অনেক দিন আপনার শ্রীচরণ দর্শন পাই নাই। আমরা কি অপরাধ করিয়াছি কি জানি। আপনি খড়িবেড়েতে নারান মুখুজ্যের ভাইপোর বিয়েতে বরযাত্রি আসিয়াছিলেন ভরত দাদার মুখে শুনিলাম। কিন্তু এ দাসিকে দর্শন দিতে আসিলেন না কেন, ইহার কারণ কিছু বুঝিলাম না। আপনি রাগ করিলে দাসির আর কে আছে বলুন? সেই ফুলশয্যার রাতের দিন আমাকে আম খাওয়ানোর জন্যে আপনার কি জেদ। আমি আম খাইনি কেন জানেন, তাহা বলিব। বিয়ের দরুণ ভালো চেলি পরণে ছিল জানো গো মশাই। তাই যদি নষ্ট হয়ে যায় সেজন্য আম খাইনি। অমনি মশাইয়ের রাগ হোল, কি রাগ সারা রাত্তির। জানো এখন আমার সে সব কথা মনে পড়লে হাসি পায়। না, এ সব লিখিব না তুমি আবার রাগ করিবে। এতদিন এখানে আসিলে না কেন? আমার ওপর রাগ করিও না। তুমি এমন নিদয়, আমার ওপর মায়া হইল না। যাই হউক, তোমার ওপর জোর আছে বলিয়া তাই তোমাকে বার বার জ্বালাতন করিতেছি। মা ও পিসিমা কত দুঃখিত ও চিন্তান্বিত হইয়াছেন একবার আসিয়া তাঁহাদের চিন্তা দূর করিবেন। ভাবিয়া দেখুন কতদিন আপনাকে দেখি নাই, না দেখিয়া আমার মনটার মধ্যে কি রকম হইতেছে। তুমি সেই গান গাহিয়াছিলে, বিভাদিদি গান গাহিয়াছিল, সেই সব কথা মনে পড়ে আর বুক যেন ফাটিয়া যায়। ওগো তুমি আমাকে আর দুঃখ দিও না একবার শ্রীচরণ দেখিতে বড় ইচ্ছা করে। ওগো, তুমি এবার আসিলে আমি কত গান শুনাবো বিভাদিদির কাছে ও কর কাকাদের বাড়ির সেজ বৌয়ের কাছে কত গান শিখিয়াছি। শুনবে তো? এসেছে হৃদয়ের হাসি অরুণ অধরে। সম্মুখে রাঙা মেঘ করে
৬১