পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথাটা আমার মনে পড়ে গেল। বললাম, একটা কথা। মাড়িঘাটের এখানে গঙ্গা আসেন কে নাকি স্বপ্ন দেখেছিল ? আপনি नांकि ? সাধু গম্ভীর হয়ে গেল। হঠাৎ । কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে এদিকওদিক তাকিয়ে দেখলে। কেমন এক অদ্ভুত ধরনের হাসি ওর দাড়ির জাল ভেদ করে ওর সারা মুখখানায় বিস্তারলাভ করলে। কি চমৎকার জ্ঞান ও কৌতুকমিশ্ৰিত হাসির ছবি, যেন অতি প্ৰবীণ জ্ঞানবৃদ্ধ ঠাকুরদাদা কৌতুক ও করুণার হাসি হাসচেন তার অবোধ নাতিটির প্রশ্ন শুনে। বললে-স্বপ্ন-টপ্ন নয়। এখানকার গরীব লোকে পয়সা খরচ করে গঙ্গায় নাইতে যেতে পারে না মাঘী পূর্ণিমায়। তাই রটিয়ে দিয়েছি মা গঙ্গা এই মড়িঘাটার গাঙে আসবেন বলেচেন আমার কাছে পূর্ণিমার যোগের দিন। মন শুদ্ধ করে নাইলে এখানেই গঙ্গা ! তিনি নেই কোন জায়গায় ? সন্ধ্যা হবার আগেই সাধুর কাছে বিদায় নিয়ে যখন নৌকোয় উঠি, তখন ওপারের সেই বটগাছটার পিছন থেকে মন্ত বড় চাদখানা উঠচে। এপারে চিকচিকে চখ বালির ঘাটে হাতজোড় করে বুনো সাধুটি দাড়িয়ে বলচে—ম-ঠাকরুণকে নিয়ে আবার আসবেন বাৰু সামনের বছর।-ভুলে যেও না মা তোমার বুড়ো খোকাকে-দণ্ডবৎ হই মা—যদি বেঁচে থাকি, সামনের বছরে পায়ের ধুলো যেন পড়ে- । দেখি আমার স্ত্রীর চোখে জল । Գ8