বাঁশের উপর রেখে দা দিয়ে কাটে, তারপর সেই রাশীকৃত গুঁড়ো তামাক কোতরা গুড় দিয়ে মেখে মেটে কলসী ভর্তি করে রাখা হয়। যে আসচে সেই কলসীর মধ্যে হাত পুরে এক থাবা তামাক বার করে নিচ্চে, কলকে আছে, ভেরেণ্ডা কিংবা বাবলা কাঠের কয়লা আছে একরাশ, সোলা আছে বোঝা বোঝা, চকমকি পাথর আর ঠুকুনি আছে—খাও কে কত তামাক খাবে! গ্রামের কতকগুলি লোক শুধু তামাকের খরচ বাঁচাবার জন্যেই আমাদের চণ্ডীমণ্ডপে সকাল-বিকেল আসে—একথা আমার মাসতুতো ভাই বিধু বলে।
দুপুরের বেশী দেরী নেই। হীরুঠাকুরকে আমি বললাম—পণ্ডিত মশায়, নাইতে যাবেন না?
—কেন?
—এর পর জোয়ার এলে আপনি নাইতে পারেন না তাই বলচি। নিরীহ সুরে বললাম কথাটা।
—কখন জোয়ার আসে?
—এইবার আসবে।
—তুমি কি করে জানলে?
—আমি—আমি জানি। বিধু বলছিল।
—না, বসে নামতা পড়ো। কড়ি-কষার আর্যা মুখস্থ হয়েছে বিধু? নিয়ে এসো—বলো শুনি।
বিধু না বলতে পেরে হীরুঠাকুরের বেঁটে হাতের চটাপট চড় খায়। আমি হঠাৎ ধারাপাতের ওপরে ভয়ানক ঝুঁকে পড়ি। এমন সময়ে আমাদের হাজারি খুঁড়ি এসে বদ্যিনাথ কাকার সামনে দাঁড়ালো।
হাজারি খুঁড়ি গোপাল ঘোষের পরিবার, ওর ছেলের নাম বলাই, আমার বয়সী, আমাদের সঙ্গে খেলা করে। গোপাল ঘোষ মারা গিয়েছে আজ বছরখানেক, ওদের সংসারে বড় কষ্ট। হাজারির এক
৭৬