বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 —ভাঁড়ে?

 —হাঁ, একটা ভাঁড়ের মধ্যে।

 —আর কোনো টাকার কথা বলেচে তোর মা?

 —না।

 —আর কারো কাছে কোনো টাকা আছে বলেনি?

 —না। বলেচে ভাঁড়ে ট্যাকা আছে।

 —বেশ, তুই চারি নিয়ে ঘর খুলে দেখগে।—বদ্যিনাথ, ওর ঘরের চাবিটা দিয়ে দাও।

 দুপুরের পর বলাই চাবি হাতে আবার আমাদের বাড়ি এসে বললে—টাকা পেলাম না।

 বাবা বললেন—টাকা পেলিনে? কোথায় গেলো অতগুলো টাকা?

 —ইঁদুরে বাঁদরে নিয়ে কোথায় ফেলেচে বাবা। তখন বললাম অঘোর ঘোষের বাড়ির দিকি বাঁশঝাড়টা কাটিয়ে দেন। ঐ বাঁশঝাড় থেকে ইঁদুর বাঁদর আসে।

 —বটে।

 —তা মুই যাই?

 —কোথায় যাবি?

 —মুই কালোপুর চলে যাই। ভগ্নীপতির বাড়ি গিয়েই থাকবো। এখানে একা ঘরে থেকে কেডা বাঁধবে, কেডা বাড়বে। মা মরে গেল। দুটো রাঁধা ভাতের জন্যে কার দোরে যাবো?

 —বুঝলাম। তোকে কোন নগদ টাকা দিয়েছিল তোর মা?

 —এক কুড়ি ট্যাকা দিয়ে গেছে। মোর কাছে আছে সে ট্যাকা। মুই তেলেভাজা খাবার কিনে খাই হাটে হাটে। একমুটো ট্যাকা।

 —আচ্ছা তুই একবার মাসখানেক পরে আসবি। দেখি তোর মায়ের টাকার যদি কোনো সন্ধান করতে পারি। বুঝলি?

৮০