বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 বীণার কাকার নাম চিন্তাহরণ চক্রবর্তী। চিরকাল বিদেশে চাকুরী করিয়াছেন, কোথাও বাড়িঘর করেন নাই, জমি বাড়ি সম্বন্ধে খুব উৎসাহ। আগে-আগে ভাবিয়া আসিয়াছেন কলিকাতায় বাড়ি করিবেন, সম্প্রতি সে আশা ত্যাগ করিয়াছেন।

 চিন্তাহরণবাবু বলিলেন—আসুন। ও কাগজটা আপনি দেখেচেন? ভালো জায়গাই বলে মনে হ’চ্ছে।

 —একটু দূরে হয়ে যাচ্ছে না কি?

 —ওর চেয়ে কাছে আর পাবেন কোথায় মশাই? -তা বটে। ষ্টেশনের কাছেই, গঙ্গার পারে।

 —এখনো সস্তা আছে। এর পরে আর থাকবে না। ইলেকট্রিক আলো, জলের কল, পঞ্চাশ ফুট চওড়া রাস্তা—

 -আপনি টাকা পাঠিয়েচেন?

 —নিশ্চয়। রসিদ এসে গিয়েচে। আপনি যদি নেবার মত করেন তবে টাকা পাঠিয়ে দিন।

 —জমি না দেখেই?

 —ও মশাই, এইবেল নাম রেজেষ্ট্রি করে রাখুন। এর পরে আর পাবেন না। ঠিকানাটা হচ্চে-দি নিউ ন্যাশনাল ল্যাণ্ড ট্রাষ্ট। রাজীব নগর।

 আমার স্ত্রী আমার নামের রসিদ দেখিয়া খুশী হইলেন। বলিলেন -কাঠা-পিছু পঞ্চাশ টাকা। ক’ কাঠার জন্যে টাকা পাঠালে, মোটে দু’কাঠা?

 —এখন এই থাক্‌। পনেরোই আগষ্ট কেটে যাক। সীমানাকমিশনের রায় বের হোক। পরে—

 পনেরোই আগষ্ট পার হইয়া গেল। সীমানা-কমিশনের রায় আর বাহির হয় না। আমার স্ত্রী বলিলেন-একবার জমিটা দেখে এসে না? বীণার কাকাকে সঙ্গে নিয়ে যাও-অনেক লোক আসচে