প্রত্যাবর্তন
মাথাটা আগে থেকেই ঝিম্ ঝিম্ করছিল। আবার বোধ হয় জ্বর আসচে।
পাল্লা-হরিশপুরের মাইনর স্কুলে পড়ি। বাবার হাতে পয়সা নেই, মা কান্নাকাটি করেন, ছেলেটার লেখাপড়া হোল না—তাই পাল্লা ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেণ্ট ষড়ানন চাটুয্যে আমার সাবেক স্কুলের মাস্টার মহাশয়ের অনুরোধে পাল্লার মাইনর স্কুলে বিনা মাইনেতে পড়তে দিয়েচেন। গ্রামের পুরুত ঠাকুর শ্রীগোপাল চক্কত্তি দয়া করে তাঁর বাড়িতে আমার খাওয়া-থাকার ব্যবস্থা করেচেন। আছি এখানে আজ বছরখানেক হোল।
থাকতে পারিনে ভালোভাবে দু’ কারণে। সে কথা কেউ জানে না। মা জানতো; কিন্তু মা তো এখন নেই এখানে।
প্রথম—ম্যালেরিয়া জ্বরে ভুগছি আজ একটি বছর। কত ওষুধ খাচ্ছি কিছুতেই সারে না।
দ্বিতীয় কারণটা—আমার ছোট ভাই দেশে আছে, তার নাম নন্তু। বড় চমৎকার ছেলে সে! সাত বছর বয়স হোল। আগে আমায় ডাকতো—‘তাতা—ও তাতা—’। এখন ‘দাদা’ বলেই ডাকে। সুন্দর দেখতে। নন্তুকে না দেখে বড় কষ্ট হয়।
সেদিন টিফিনের ছুটি হবার আগেই মাস্টার মশাইকে বলি—স্যার, আমার জ্বর আসচে—
ননী মাস্টার আমার দিকে চেয়ে সহানুভূতির সুরে বললেন,—আবার জ্বর?
—হ্যাঁ, স্যার।
—বাড়ি যাবি?
৮৮