পাতা:নীল-দর্পণ.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

(১০)

দিয়াছিল যে তাহার জোরেই হাকিমের রায় ফিরিয়া যায়। এই বেটার কৌশলেই সাবেক দেওয়ানের দুই বৎসর মেয়াদ হয়। আমি বারণ করিয়াছিলাম, নবীন বাবু, সাহেবের বিরুদ্বাচরণ কর না। বিশেষ সাহেব তো তোমার ঘর জ্বালান নাই, তাতে বেটা উত্তর দিল “গোরিব প্রজাগণের রক্ষাতে দীক্ষিত হইয়াছি, নিষ্ঠুর নীলকরের পীড়ন হইতে যদি এক জন প্রজাকেও রক্ষা করিতে পারি তাহা হইলেই আপনাকে ধন্য জ্ঞান করিব, আর দেওয়ানজিকে জেলে দিয়ে বাগানের শোধ লব”। বেটা যেন পাদরি হয়ে বসেছে। বেটা এবার আবার কি যোটা যোট করিতেছে তার কিছুই বুছিতে পারি না।

 উড। তুমি ভয় পাইয়াছ, হাম বোলা কি নেই তুমি বড় না লায়েক আছে, তোম্‌ছে কাম্‌ হোগা নেই।

 গোপী। হুজুর ভয় পাওয়ার মত কি দেখিলেন, যখন এ পদবীতে পদার্পণ করিছি, তখন ভয়, লজ্জা, সরম্‌, মান, মর্য্যাদার মাথা খাইয়াছি, গোহত্যা, ব্রাহ্মহত্যা, স্ত্রীহত্যা, ঘরজ্বালন অঙ্গের আভরণ হইয়াছে, আর জেলখানা শিওরে করে বসে আছি।

 উড। আমি কথা চাইনে, আমি কায চাই।

(সাধুচরণ, রাইচরণ, আমিন ও পেয়দা

দ্বয়ের সেলাম্‌ করিতে করিতে প্রবেশ)

 এ বজ্জাতের হস্তে দড়ি পড়িয়াছে কেন?

 গোপী। ধর্ম্মাবতার, এই সাধুচরণ এক জন মাতব্বর রাইয়ত, কিন্তু নবীন বসের পরামর্শে নীলের ধ্বংসে প্রবৃত্ত হইয়াছে।

 সাধু। ধর্ম্মাবতার নীলের বিরুদ্ধাচরণ করি নাই, করি-