পাতা:নীল-দর্পণ.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

(১২)

আছে। তোমার যদি ২০ বিঘার ৯ বিঘা নীল করিতে বলেছে তবে তুমি কেন আর ৯ বিঘা নূতন করিয়া ধান কর না।

 গোপী। ধর্ম্মাবতার যে লোকসান জমা পড়ে আছে তাহা হইতে ৯ বিঘা কেন ২০ বিঘা পাট্টা করিয়া দিতে পারি।

 সাধু। (স্বগত) হা ভগবান্‌! শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল। (প্রকাশে) হুজুর, যে ৯ বিঘা নীলের জন্যে চিহ্নিত হইয়াছে, তাহা যদি কুটির লাঙ্গল, গোরু ও মাইন্দার দিয়া আবাদ হয়, তবে আমি আর ৯ বিঘা নূতন করিয়া ধানের জন্যে লইতে পারি। ধানের জমিতে যে কারকিত করিতে হয় তার চার গুণ কারকিত নীলের জমিতে দরকার করে, সুতরাং যদিও ৯ বিঘা আমার চাস দিতে হয় তবে বাকী ১১ বিঘা পড়ে থাক্‌বে তা আবার নূতন জমি আবাদ বর্‌বো।

 উড। শালা বড় হারামজাদা, দাদনের টাকা নিবি তুই, চাস দিতে হবে আমি, শালা বড় বজ্জাত (জুতারগুঁতা প্রহার) শ্যামচাঁদকা সাৎ মুলাকাৎ হোনেছে হারামজাদ্‌কি সব ছোড় যাগা (দেয়াল হইতে শ্যামচাঁদ গ্রহণ)

 সাধু। হুজুর, মাছি মেরে হাত কাল করা মাত্র, আমরা—

 রাই। (সক্রোধে) ও দাদা, তুই চুপ দে, ঝা ন্যাকে নিতি চাচ্চে ন্যাকে দে, ক্ষিদের চোটে নাড়ী ছিঁড়ে পড়লো, সারা দিনডে গ্যাল, নাতিও পালাম না, খাতিও পালাম না।

 আমিন। কই শালা, ফৌজদারী কর্‌লিনে?

  (কান মলন)

 রাই। (হাঁপাইতে ২) মলাম্‌, মাগো! মাগো!

 উড। ব্লাডি নিগার্‌ মরো বাঞ্চৎ কো (শ্যামচাঁদাঘাত)

(নবীনমাধবের প্রবেশ।)