পাতা:নীল-দর্পণ.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

(১৬)

সবুজ সুতা ফুর্‌য়ে গেছে তাই আমি ওখানে জরদ দিয়েছি।

 সৈরি। তোমার বুঝি আর হাটের দিন পর্য্যন্ত ভর সইল না—তোমার বোন্‌ সকলি তাড়াতাড়ি, বলে

বৃন্দাবনে আছেন হরি।
ইচ্ছা হলে রইতে নারি॥

 সর। বাহবা—আমার কি দোষ, হাটে কি পাওয়া যায়? ঠাকুরুণ গেলো হাটে মহাশয়েকে আন্‌তে বলেছিলেন, তা তিনি পান্‌ নি।

 সৈরি। তবে ওঁরা যখন ঠাকুরপোকে চিটি লিখিবেন সেই সময় পাঁচ রঙ্গের সূতার কথা লিখে দিতে বল্‌বো।

 সর। দিদি এ মাসের আর কদিন আছে গা—

 সৈরি। (হাস্যবদনে) যার যে খানে ব্যথা, তার সেখানে হাত। ঠাকুরপোর কালেজ বন্দ হলে বাড়ি আস্‌বের কথা আছে—তাই তুমি দিন গুণচো—আর বোন্‌, মনের কথা বের্‌য়ে পড়েছে!

 সর। মাইরি দিদি আমি তা ভেবে জিজ্ঞাসা করিনি— মাইরি।

 সৈরি। ঠাকুরপোর আমার কি সুচরিত্র, কি মধুমাখা কথা! ওঁরা যখন ঠাকুরপোর চিটি গুলিন পড়েন যেন অমৃত বর্ষণ হইতে থাকে? দাদার প্রতি এমন ভক্তি কখন দেখিনি, দাদারি বা কি স্নেহ, বিন্দুমাধবের নামে মুখে লাল পড়ে, আর বুকখান পাঁচ হাত হয়। আমার যেমন ঠাকুরপো তেমনি ছোট বউ-(সরলতার গাল্‌টিপে) সরলতা তো সরলতা—আমি কি তামাক পোড়ার কটোটা আনিনি, যেমন এক দণ্ড তামাক পোড়া নইলে বাঁচিনে তেমনি কটোটা যেন আগে ভুলে এসিছি।