পাতা:নীল-দর্পণ.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(২২)

ধল্লি কত্তি পারে না? মা, জান না, নয়দারা রাজিনামা দ্দিতি চাইনি বল্যে ওদের মেজো বউরি ঘর ভেঙ্গে ধর‍্যে নিয়ে গিয়েলো।

 সাবি। কি অরাজক! সাধুকে এ কথা বলেছ?

 রেবতী। না, মা, সে য়্যাকিই নীলির ঘায় পাগল, তাতে এ কথা শুনে কি আর রক্ষা রাখ্‌বে, রাগের মাথায় আপনার মাথায় আপনি কুড়ুল মেরে বসবে।

 সাবি। আচ্ছা, আমি কত্তাকে দিয়ে একথা সাধুকে বলবো তোমার কিছু বল্‌বার আবশ্যক নেই—কি সর্ব্বনাশ! নীলকর সাহেবেরা সব কত্তে পারে, তবে যে বলে সাহেবেরা বড় সুবিচার করে, আমার বিন্দু যে সাহেবদের কত ভাল বলে, তা এরা কি সাহেব না, না এর সাহেবদের চণ্ডাল।

 রেবতী। ময়রাণী বিটি আর এক কথা বল্যে গ্যাল, তা বুঝি বড় বাবু শুনিন্‌নি—কি একটা নতুন হুকুম হয়েছে, তাতে নাকি কুটেল সাহেবের মাচেরটক্‌ সাহেবের সঙ্গে যোগ দিয়ে যাকে তাকে ৬ মাস ম্যাদ দিতি পারে। তা কত্তা মশাইরি নাকি এই ফাঁদে ফ্যালবার পথ কচ্চে।

 সাবি। (দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলিয়া) ভগবতীর মনে যদি তাই থাকে, হবে।

 রেবতী। মা কত কথা বল্যে গ্যাল, তাকি আমি বুঝতি পারি, নাকি এ ম্যাদের পিল্‌ হয় না—

 আদুরী। ম্যাদেরে বুঝি পেটপোড়া খেব্‌এচে।

 সাবি। আদুরী, তুই একটু চুপ কর বাছা।

 রেবতী। কুটির বিবি এই মকদ্দমা পাকাবার জন্যি মাচেরটক্‌ সাহেবকে চিঠি ন্যাকেছে, বিবির কথা হাকিম নাকি বড্‌ডো শোনে।