পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

বৃত্তি আমাদের মানসক্ষেত্রে জন্মিয়াছে এবং ঐরূপ প্রতিষ্ঠান পরগাছার মত আমাদের জাতীয় জীবনকে ভারগ্রস্ত ও শক্তিহীন করিয়া তুলিয়াছে। আজ বাঙ্গলার তরুণ-সমাজকে রুদ্রের মত বলিতে হইবে— জাতি-সমাজ-গঠন-বিরোধী বৃত্তিনিচয় আমরা কুসংস্কারজ্ঞানে বিষবৎ পরিত্যাগ করিব এবং জাতি-সমাজ-গঠনের প্রতিকূল সমস্ত প্রতিষ্ঠান আমরা একেবারে নির্ম্মূল করিব।

 ব্যক্তিত্ব বিকাশ সম্বন্ধে আমি আজ মাত্র একটী কথা বলিব। “সাধনা” বলিতে অনেকে অনেক রকম বুঝিয়া থাকেন এবং সাধনার বিভিন্ন প্রকার ব্যাখ্যাও শুনিতে পাওয়া যায়। আমার ধারণা এই যে সাধনার উদ্দেশ্য মনুষ্যজীবনের রূপান্তর করা। রূপান্তর-সাধন করিতে হইলে বাহির হইতে চেষ্টা করিলে চলিবে না—মানুষের জীবন নূতন আদর্শের দ্বারা অনুপ্রাণিত করিতে হইবে। আদর্শের চরণে নিজেকে আত্মসমর্পণ করিতে হইবে—ঐ আদর্শের অনুসরণে নিজেকে নিঃশেষে বিলাইয়া দিতে হইবে। আদর্শের চরণে আত্মবলিদান করিতে পারিলে—মানুষের চিন্তা, কথা ও কার্য্য—এক সুরে বাঁধা হইবে; তাহার ভিতর বাহির এক হইয়া যাইবে; তাহার সমস্ত জীবন এক আদর্শ-সূত্রে গ্রথিত হইবে; সে তখন তাহার জীবনে নূতন রস, নুতন আনন্দ, নূতন অর্থ খুঁজিয়া পাইবে। সমগ্র বিশ্বজগৎ তাহার নিকট নুতন অলোকে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিবে।

 বর্ত্তমান যুগে যুগোপযোগী সাধনায় যদি প্রবৃত্ত হইতে হয় তাহা

৯৬