পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

হারাইয়াছি। ইহার ফলে আমাদের সমাজে নীচ চিন্তা, ক্ষুদ্র স্বার্থ ও পরস্পরের মধ্যে দলাদলি দেখা দিয়াছে, আমরা অসত্যকে সত্য মনে করিয়া, আসলকে ছাড়িয়া ছায়ার পশ্চাতে ছুটয়াছি। কিন্তু সুখের বিষয়, আমাদের এই সাময়িক মোহ ভাঙ্গিতেছে; আমরা আমাদের সহজ দৃষ্টি ফিরিয়া পাইতেছি। তরুণের হৃদয়ে আবার আত্ম-প্রত্যয় জন্মিতেছে। সে বুঝিতেছে―জীবনে তাহার উপর কত বড় দায়িত্ব ন্যস্ত হইয়াছে; সে উপলব্ধি করিতেছে যে ভবিষ্যৎ সমাজ গড়িয়া তোলার ভার তাহাকেই গ্রহণ করিতে হইবে। শুধু তাহাই নয়, আমাদের তরুণ-সমাজ আজ নিজের অন্তরে অনন্ত শক্তির সন্ধান পাইতেছে। সর্ব্বদেশে সর্ব্বকালে যে মৃত্যুঞ্জয় তরুণশক্তি মুক্তির ইতিহাস রচনা করিয়াছে, আমাদের দেশে আজ সেই তরুণশক্তিই নিজের অস্থিদান করিয়া বজ্র নির্ম্মাণের সাধনায় প্রবৃত্ত হইতেছে।

 আমাদের জাতীয় সমস্যা বিষয়ে আমার বক্তব্য অনেক আছে। একটী অভিভাষণে বা বক্তৃতায় তাহা ব্যক্ত করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়―তাই আমি সে চেষ্টাও করিব না। বিস্তৃত আলোচনায় প্রবৃত্ত না হইয়া আমি মূল সমস্যা সম্বন্ধে কয়েকটী কথা বলিয়া ক্ষান্ত হইব।

 পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক সভ্যতার অভ্যুত্থান, ক্রমোন্নতি ও পতন হইয়াছে। আমরাও একদিন স্বাধীন ছিলাম। ধর্ম্মে কর্ম্মে, কাব্যে সাহিত্যে, শিল্পে বাণিজ্যে, যুদ্ধবিগ্রহে―ভারতবাসীও একদিন

১২৪