পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্র আন্দোলন

একেবারে বিফল। ষে কুলে নারীরা শোক করিয়া থাকেন (বা উৎপীড়িতা হইয়া থাকেন) সে কুল অতি শীঘ্র বিনষ্ট হয় এবং যে কুলে তাহাদের কোনও দুঃখ, কষ্ট শোক নাই——সে কুলের শ্রীবৃদ্ধি হইয়া থাকে।” যে যুগে এ দেশে নারীজাতির সম্মান অক্ষুন্ন ছিল, সে যুগে মৈত্রেয়ী, গার্গীর মত ঋষিপত্নী জন্মিয়াছিল, সে যুগে খনা, লীলাবতীর মত বিদূষীর আবির্ভাব হইয়াছিল, অহল্যাবাই ও ঝানসীর রাণীর মত বীর-রমণীর অভ্যুদয় হইয়াছিল। এ সোণার বাঙ্গলায়ও আমরা একদিন রাণীভবানী ও দেবীচৌধুরাণীর মত রমণী দেখিয়াছিলাম।

 আমার ছাত্রবন্ধুরা হয় তো আশ্চর্য্য হইতেছেন যে, ছাত্র সম্মিলনীতে আমি এ সব কথার অবতারণা কেন করিতেছি? কিন্তু বড় ব্যথা পাইয়া একথা আমি আজ বলিতে বাধ্য হইয়াছি। নারী সমাজ যে পর্য্যন্ত বীর-প্রসু না হইতেছে, সে পর্য্যন্ত আমরা জাতি হিসাবে মনুষ্যত্ব লাভ করিতে পারিব না। কিন্তু যে পর্য্যন্ত আমরা ঘরে ও বাহিরে মাতৃ-জাতিকে সম্মান ও গৌরবের আসনে না বসাইতেছি, সে পর্য্যন্ত এ দেশের নারী-জাতি বীর প্রসবিনী হইতে পারেন না। আমাদের মাতৃজাতিকে আমরা যদি শক্তিরূপিণী করিতে চাই তাহা হইলে বাল্য-বিবাহ প্রথা উচ্ছেদ করিতে হইবে; স্ত্রীজাতিকে আজীবন ব্রহ্মচর্য্য পালনের অধিকার দিতে হইবে; উপযুক্ত স্ত্রী শিক্ষার আয়োজন করিতে হইবে;