পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্র আন্দোলন

আমরা প্রায়ই শুনিয়া থাকি—“ছাত্রাং অধ্যয়নং তপঃ”—অধ্যয়নই ছাত্রজীবনের তপস্যা। এই বচনের দোহাই দিয়া ছাত্রদিগের দেশসেবার কার্য্য হইতে নিরস্ত রাখিবার চেষ্টা অনেকেই করিয়া থাকেন।

 অধ্যয়ন কোনও দিন তপস্যা হইতে পারে না। অধ্যয়নের অর্থ কতকগুলি গ্রন্থ পাঠ ও কতকগুলি পরীক্ষা পাশ। ইহার দ্বারা মানুষ স্বর্ণপদক লাভ করিতে পারে—হয় তো বড় চাকুরী পাইতে পারে—কিন্তু মনুষ্যত্ব অর্জ্জন করিতে পারে না। পুস্তক পাঠ করিয়া আমরা উচ্চভাব বা আদর্শ শিক্ষা করিতে পারি—এ কথা সত্য কিন্তু সে সব ভাব যে পর্য্যন্ত আমরা উপলব্ধি ও হৃদয়ঙ্গম করিয়া কার্য্যে পরিণত না করিতেছি সে পর্য্যন্ত আমাদের চরিত্র গঠন হইতে পারে না। তপস্যার উদ্দেশ্য সত্যকে উপলব্ধি করা—শ্রবণ, মনন নিদিধ্যাসন প্রভৃতি উপায়ে তদ্‌ভাবভাবিত হইয়া সত্যের সহিত মিশিয়া যাওয়া। সে অবস্থায় মানুষ যখন পৌঁছায় তখন তাহা জীবনের রূপান্তর হয়। সে তখন জীবনের প্রকৃত অর্থ ও উদ্দেশ্য বুঝিতে পারে এবং অন্তর্লব্ধ নূতন শক্তি ও আলোকের দ্বারা সে নূতন পথে নূতন ভাবে তাহার জীবন নিয়ন্ত্রিত করে। এরূপ সাধনায় সিদ্ধিলাভ করিতে হইলে অল্প বয়স হইতেই কাজ আরম্ভ করা আবশ্যক। যখন মানুষের অদম্য শক্তি ও উৎসাহ আছে, অফুরন্ত কল্পনা-শক্তি ও ত্যাগস্পৃহা আছে, নিঃস্বার্থ ভাবে মানুষ যখন ভালবাসিতে পারে

১১