পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

—তখনই সে আদর্শের চরণে আত্মবলিদান করিতে পারে—অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করিয়া ভাবের তরঙ্গে জীবনতরী ভাসাইয়া দিতে পারে।

 সুতরাং কৈশোর ও যৌবনই সাধনার প্রকৃষ্ট সময়। টাট্‌কা বাঙ্গা খুলেই দেবীর আরাধনা হইয়া থাকে, পুরাণো বাসি ফুলের দ্বারা সে পূজার কাজ সমাধা হইতে পারে না। তাই বলি হে আমার তরুণ ভাইসব, তোমাদের হৃদয় যখন পবিত্র, শক্তি যখন অফুরন্ত, উৎসাহ যখন অদম্য এবং ভবিষ্যৎ জীবন যখন আশার রক্তিম-রাগে রঞ্জিত, সেই শুভ সময়ে জীবনের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ আদর্শের চরণে আত্মোৎসর্গ কর।

 সে আদর্শ কি——যাহার প্রেরণায় মানুষ অমৃতের সন্ধার পায়, বিপুল আনন্দের আস্বাদ পায়, অসীমাশক্তির পরিচয় পায়? সে আদর্শ কি—যাহার পুণ্যপরশে দেশে দেশে যুগে যুগে মহাপুরুষের সৃষ্টি হইয়া থাকে? তোমরা হয়তো মনে কর যে মহাপুরুষেরা বড় হইয়াই জন্মায়—তাঁহাদিগকে চেষ্টা করিয়া, পরিশ্রম করিয়া বা সাধনা করিয়া বড় হইতে হয় না। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। মহাপুরুষেরা মহত্ত্ব লাভের সম্ভাবনা লইয়াই জন্মগ্রহণ করেন সন্দেহ নাই; কিন্তু সাধনা ব্যতীত তাহারা সে মহত্ত্বের বিকাশ সাধন করিতে পারেন না বা সর্ব্বসম্মতিক্রমে মহাপুরুষের আসন গ্রহণ করিতে পারেন না। যত পুরুষ এ পৃথিবীতে আজ পর্য্যন্ত জন্মগ্রহণ করিয়াছেন তাহাদের জীবনী যদি বিশ্লেষণ কর তাহা হইলে দেখিবে যে প্রত্যেকের

১২