পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

 দেশমাতৃকার চরণে নিজেকে নিঃশেষে বিলাইয়া দিব—ইহাই একমাত্র সাধনা হওয়া উচিত। এই সাধনার আরম্ভ ছাত্রজীবনেই হওয়া উচিত। দান করিবার মত সম্পদ, অর্জ্জ‌ন ও সঞ্চয় করিতে হইবে ছাত্রজীবনেই। শরীরে যাহার বল আছে, মনে যাহার সাহস ও তেজ আছে, শিক্ষা দীক্ষা যে পাইয়াছে, ব্রহ্মচর্য্য সাধনে যে ব্রতী হইয়াছে—সে ব্যক্তির দিবার মত সম্বল আছে। যে ভিক্ষুক, যে নিতান্ত দীন হীন, তাহার দানের কোনও অর্থ নাই; সে নিজেই কৃপার পাত্র। ছাত্রজীবনে শারীরিক বল সঞ্চয় করিতে হইবে ও চরিত্র গঠন করিতে হইবে এবং জ্ঞান আহরণ করিতে হইবে; এক কথায় শরীর, মন ও হৃদয় এই তিন দিক দিয়া জীবনের বিকাশ সাধন করিয়া মনুষ্যত্ব অর্জ্জ‌ন করিতে হইবে।

 দেশসেবার জন্য প্রাণের সম্পদ ও যোগ্যতা অর্জ্জ‌ন করা যদি ছাত্রজীবনের উদ্দেশ্য হয় তাহা হইলে পরীক্ষা পাশ ও স্বর্ণপদক লাভের মূল্য যে কতটা তাহা আপনার সহজে অনুমান করিতে পারেন। আজকাল স্কুল ও কলেজে “ভাল ছেলে” নামে একশ্রেণীর দেখিতে পাওয়া যায়; আমি তাহাদিগকে কৃপার চক্ষে দেখিয়া থাকি। তাহারা গ্রন্থকীট-পুঁথির বাহিরে তাহদের অস্তিত্ব নাই এবং পরীক্ষার প্রাঙ্গণে তাহদের জীবন পর্য্যবসিত হয়। ইহাদের সহিত তুলনা করুন—“বকাটে” রবার্ট ক্লাইভকে। এই “বাপে তাড়ানো মায়ে খেদানো” ছেলে সাত-সমুদ্র তের নদী পার হইয়া অজানার

১৪