পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্র আন্দোলন

সূত্রে আবব্ধ হইতে পারিবে, এ বিশ্বাস তাঁহার ছিল। ধর্ম্মজগতে বিপ্লব আনিতে হইলে, আগে চিন্তাজগতে আলোড়ন উপস্থিত করা দরকার—তাই ভারতের চিন্তা-শক্তিকে জাগাইবার জন্য তিনি পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করিয়াছিলেন।

 ভারতকে জাগাইবার জন্য মনোরাজ্যে যে বিপ্লব রামমোহন প্রবর্ত্তিত করিলেন, পরবর্ত্তী যুগে সে বিপ্লব সমাজের মধ্যে আসিয়া পড়িল। কেশবচন্দ্রের যুগে সমাজ সংস্কারের কাজ দ্রুতগতিতে চলিতে লাগিল। ব্রাহ্মসমাজের নূতন বাণীর ফলে সমগ্র দেশে নব জাগরণ আরম্ভ হইল। কিছুকাল পরে যখন ব্রাহ্ম সমাজ হিন্দুসমাজ হইতে পৃথক হইয়া পড়িল এবং হিন্দুসমাজের মধ্যেও জাগরণের সূচনা হইল তখন ব্রাহ্ম সমাজের প্রভাব ক্রমশঃ হ্রাস পাইতে লাগিল।

 রামমোহনের যুগ হইতে বিভিন্ন আন্দোলনের ভিতর দিয়া ভারতের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা ক্রমশঃ প্রকটিত হইয়া আসিতেছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এই আকাঙ্ক্ষা চিন্তারাজ্যে ও সমাজের মধ্যে দেখা দিয়াছিল কিন্তু রাষ্ট্রীয়ক্ষেত্রে তখনও দেখা দেয় নাই—কারণ তখনও ভারতবাসী পরাধীনতার মোহনিদ্রায় নিমগ্ন থাকিয়া মনে করিতেছিল যে, ইংরাজের ভারত-বিজয় একটা দৈব ঘটনা বা divine dispensation. ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এবং বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে স্বাধীনতার অখণ্ড রূপের আভাস রামকৃষ্ণ-বিবেকা-

২৫