পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

 এই বাণী আরও পরিস্ফুট হইয়াছিল দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের জীবনে। তিনি তাঁহার লাহোরের বক্তৃতায় অতি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন যে, যে স্বরাজ তিনি লাভ করিতে চান—তাহা মুষ্টিমেয় লোকের জন্য নহে—তাহা সকলের জন্য, জন সাধারণের জন্য। “Swaraj for the masses”—এই আদর্শ তিনি নিখিল ভারতীয় শ্রমিক সভায় দেশবাসীর সম্মুখে উপস্থিত করেন।

 আর একটা বাণী আমরা দেশবন্ধুর জীবনে পাই—সেটা এই যে মানুষের জীবন—জাতির এবং ব্যক্তির জীবন—একটা অখণ্ড সত্য। এই জীবনকে দ্বিধা বা বহুধা বিভক্ত করা যায় না। মানুষের প্রাণ যখন জাগে তখন তাহা সব দিক দিয়া জাগরণের পরিচয় দেয় এবং সর্ব্বক্ষেত্রে নবজীবনের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। বিশ্বজগৎ—তথা মানুষজীবন—বৈচিত্র্যপূর্ণ। এই বৈচিত্র্যের লোপ সাধন করিলে জীবনের বিকাশ হইবে না—বরং আমরা মরণের বা ধ্বংসের নিকটবর্ত্তী হইব। তাই বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়া, “বহুর” মধ্য দিয়া ব্যক্তির এবং জাতির বিকাশ সাধন করিতে হইবে।

 বর্ত্তমান যুগে রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দ আধ্যাত্মিক জগতে “এক” এবং “বহুর” মধ্যে যে সমন্বয় স্থাপন করিয়াছিলেন—সে সমন্বয় দেশবন্ধু জাতির জীবনে এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে করিয়াছিলেন বা করিতে প্রয়াস পাইয়াছিলেন। দেশবন্ধু “শিক্ষার মিলনে” যেরূপ বিশ্বাস করিতেন “শিক্ষার বিরোধে” ও তদ্রূপ বিশ্বাস করিতেন

২৮