পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্র আন্দোলন

কলিকাতায় ফিরিয়া আসে নাই—আসিয়াছিল পবিত্র, মহৎ ও স্বর্গীয় একটা ভাবের প্রতীক হিসাবে। যতীন মরে নাই— ভবিষ্যৎবংশীয়দিগের পথ নির্দ্দেশ করিবার জন্য সে আকাশের তারকার মত উজ্জ্বল হইয়া জাতির জীবনে বাঁচিয়া আছে, তাঁহার আত্মত্যাগ ও দুঃখের মধ্য দিয়া সে অমর হইয়া আছে। ভাবমূত্তির মধ্যে, আদর্শের মধ্যে,—মানুষের ইতিহাসে যাহা কিছু মহৎ, যাহা কিছু পবিত্র,—তাহার মধ্যে সে দীপ্ত ভাস্বর হইয়া বিরাজ করিতেছে। আপনাকে বিসর্জজন দিয়া সে যে শুধু ভারতবর্ষের আত্মাটীকে উদ্বুদ্ধ করিয়াছে, তাই নয়, দুইটী প্রদেশকে এক অচ্ছেদ্য শৃঙ্খলে বাঁধিয়া দিয়াছে।

 যতই আমরা ক্রমশঃ স্বাধীনতার নবপ্রভাতের দিকে অগ্রসর হইতেছি, ততই আমাদের দুঃখবেদনার পাত্র পূর্ণ হইয়া আসিতেছে। নিজেদের হাত হইতে রাজশক্তি প্রতিদিন অপসারিত হইতেছে দেখিয়া নির্দ্দয় হইয়া উঠা আমাদের শাসকদের পক্ষে খুবই স্বাভাবিক। আর, যদি ক্রমে ক্রমে সভ্যতার ভাণ ত্যাগ করিয়া, মনুষ্যত্বের ছদ্মবেশ ছাড়িয়া তাহারা অত্যাচারের ভীষণ স্বরূপ প্রকাশ করে, তাহাতেও আশ্চর্য্য হইবার কিছুই নাই। পঞ্জাব ও বাঙ্গলাদেশের উপরে আজকাল সকলের চেয়ে বেশী অত্যাচার করা হইতেছে। বস্তুতঃ, ইহা আনন্দের বিষয়; কারণ, এই অত্যাচারের মধ্য দিয়া আমরা স্বরাজের উপযুক্ত হইয়া উঠিতেছি। ভগৎসিংহ ও

৩৯